মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যের অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজেই ‘থ্রেট কালচার’-এর দাপটে জুনিয়র ডাক্তাররা ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতেন। আরজি করকাণ্ডের পর জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctor) লাগাতার আন্দোলনের ফলে এই বিষয়টি সামনে এসেছে। থ্রেট কালচারের সঙ্গে যুক্তদের নাম প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। চাপে পড়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। এই আবহের মধ্যে এবার বর্ধমান (Burdwan Medical) মেডিক্যাল কলেজের মহিলা জুনিয়র ডাক্তারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ, জুনিয়র ডাক্তাররা মুখ খুললে সিন্ডিকেটের আরও অনেক গোপন তথ্য সামনে চলে আসবে। মুখ বন্ধ করতে হোয়াটসঅ্যাপ কল করে হুমকি দিতে শুরু করেছে অভীকদের গ্যাং। এমনই অভিযোগ করছেন আন্দোলনকারীরা। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
কী বললেন আন্দোলনকারীরা? (Junior Doctor)
আন্দোলনকারী এক জুনিয়র ডাক্তার শুভব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে তাঁরা জানেন কারা কারা অভিযোগ করতে পারে। এর ফলে যাঁরা অভিযোগ করছেন বা করতে পারেন, তাঁদেরকে অপরিচিত হোয়াটস্যাপ নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁদেরকে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। বর্ধমান মেডিক্যালের মোট ২১ জন চিকিৎসককে কলেজ ক্যাম্পাসে যাতে ঢুকতে না পারে সেই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। ফলে, তাঁরা ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পেরে অপরিচিত নম্বর থেকে ভয় দেখানো শুরু করেছেন। এটা তো পরিস্কার যে যাঁরা হুমকি দিচ্ছেন, তাঁদের পিছনে কোনও বড় হাত রয়েছে। নাহলে তাঁরা এত সাহস পায় কীভাবে? এটা তদন্তে মনে হয় বের হবে। বেশিরভাগ কল মহিলা জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctor) করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকজন পুরুষ জুনিয়র ডাক্তারও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘আরজি কর কাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রত্যেক দেশবাসী’, সুইৎজারল্যান্ডে বললেন জয়শঙ্কর
বর্ধমান মেডিক্যালে অভীক বাহিনীর দাপট!
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দাপিয়ে বেড়াতেন অভীক দে। তাঁর বাহিনী জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctor) ওপর খবরদারি করত বলে অভিযোগ। গত ১১ অগাস্ট বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের লেকচারার থিয়েটারে রাত ১১টা পর্যন্ত বেশ কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার ও পিজিটি-কে নিয়ে বৈঠক করেন অভীক দে। যেখানে নিয়ম অনুযায়ী, সন্ধে সাতটার পর এই লেকচারার থিয়েটার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে কোন অধিকারে একজন রাত ১১টার সময় সেখানে বৈঠক করেন? অভিযোগ, সেদিনের ওই বৈঠকে চিকিৎসক পড়ুয়া এবং জুনিয়র ডাক্তারদের সামনে অভীক স্বীকার করেছিলেন, তিনি ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি নির্যাতিতা চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ দেখেছিলেন। অভিযোগ, ওই বৈঠকে অভীক আরও দাবি করেন, ‘ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটেনি। সন্দীপ ঘোষ দোষী নন।’
আরও অভিযোগ, এভাবেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলনকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত করেছেন চিকিৎসক অভীক দে এবং তাঁর অনুগামীরা। জুনিয়র ডাক্তার গৌরাঙ্গ প্রামাণিক জানান, সম্প্রতি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের জিবি বৈঠকে অভীক দে এবং তাঁর অনুগামীরা আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের হুমকি দেন। এমনকী, কলেজের মধ্যেও তাঁদের হুমকি দিচ্ছে বহিরাগতরা। আন্দোলনকারীদের হস্টেল থেকে বের করে দেওয়া হবে। পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া হবে না বলেও বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনের জেরে কর্তৃপক্ষ ২১ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরও হুমকি ফোন আসছেই। ইতিমধ্যেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নাম দিয়ে অভিযোগ জমা করা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours