মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তাল কাটল শেষে! মুম্বইতে ইন্ডিয়া জোটের মিটিং শেষ হওয়ার পরেই বেরিয়ে গেলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকলেন না সাংবাদিক বৈঠকে। তাহলে কি অসন্তোষ? মতের মিল হল না। মোদি-বিরোধী 'পাঁচ মিশলি' জোট ভোটের আগে পর্যন্ত এক ছাতার তলায় থাকে কি না তা নিয়েই এখন সরগরম দেশের রাজনীতি।
দ্রুত প্রস্থান মমতার
শুক্রের সন্ধ্যাতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কলকাতা ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন জোটের বৈঠকে বাকি ২৬টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অংশ নিলেও। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। বিরোধী জোটের সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার আগে তৃণমূল সুপ্রিমোর মুম্বই ত্যাগ নিয়ে আলোচনা রাজনৈতিক মহলে।
রাহুল গান্ধীর উপর অসন্তুষ্ট মমতা
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর উপর অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দিন জোটের বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে মোদি ও আদানি আঁতাত নিয়ে সরব হন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন তিনি। রাহুলের এই পদক্ষেপেই অসন্তুষ্ট তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ জোটের বৈঠকে কোনও প্রাথমিক আলোচনা ছাড়াই আদানি প্রসঙ্গ তোলেন রাহুল। সূত্রের দাবি, এদিন এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন কংগ্রেস নেতাকে প্রশ্নও করেন বিষয়টি ঠিক হল কিনা।
জাতিভিত্তিক জনগণনা নিয়ে মতপার্থক্য
সূত্রের খবর এবারের বৈঠকে জেডিইউ, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলি জাতিভিত্তিক জনগণনার পক্ষে থাকলেও বিরোধিতা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতিভিত্তিক জনগণনা নিয়ে এই মতপার্থক্যের জেরে রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা স্থগিত রাখা হয়। তবে এই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকের পর তড়িঘড়ি মুম্বই ছাড়েন কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।
১৪ সদস্যের সমন্বয় কমিটি
দ্বিতীয় পর্বের জোট বৈঠকে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কমিটিতে তারুণ্যেই জোর দেওয়া হয়েছে। ১৪ সদস্যের এই সমন্বয় কমিটির মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, CPI নেতা ডি রাজা, DMK নেতা টি আর বালু, NCP প্রধান শরদ পাওয়ার,শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত, বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, আপ সাংসদ রাঘব চড্ডা, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, JDU নেতা লল্লন সিং, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং অপর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতা নেত্রীর নামও ওই কমিটিতে রয়েছে। তবে তৃণমূলের তরফ থেকে কেবলমাত্র অভিষেকের নামই দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেসের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ
পাটনায় জোটের বৈঠক থেকে আগাম বেরিয়ে গিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বেঙ্গালুরুতে বেরিয়ে গিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। প্রথমবার যখন অরবিন্দ কেজরিওয়াল বেরিয়ে গিয়েছিলেন তখন তিনি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছিলেন। তবে এদিন তৃণমূলের তরফ থেকে এনিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলায় সিপিএম ও কংগ্রেসের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মমতা। এদিন ধূপগুড়িতে যেভাবে মহম্মদ সেলিম অভিষেককে আক্রমণ করেছেন তাতে জোট কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours