মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আউটডোরে ডাক্তার না থাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল (North Bengal Medical) কলেজ হাসপাতালে তান্ডব চালালেন রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনেরা। হামলা চালানো হল হাসপাতালের সুপারের অফিসেও। মঙ্গলবার সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এই ঘটনার পুরো দায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলে জানালেন বিজেপির (BJP) জলপাইগুড়ি সাংসদ জয়ন্ত রায়।
ঠিক কী ঘটেছিল? (BJP)
আরজি করকাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল (North Bengal Medical) কলেজ হাসপাতালেও জুনিয়র ডাক্তারদের দীর্ঘ আন্দোলন এবং অনশন চলছে। গত সোমবার থেকে রাজ্যজুড়ে সিনিয়র ডাক্তাররা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবায় কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তবুও, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সোমবার এবং মঙ্গলবার আউটডোরে রোগী দেখেন পিজিটি ও জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু, এদিন সাইক্রিয়াটিক আউটডোরে কোনও ডাক্তার ছিলেন না। সকাল থেকে রোগীদের লাইন ক্রমশ লম্বা হতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ডাক্তারের দেখা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রোগীরা। অভিযোগ, সেসময় সাইক্রিয়াটিক বিভাগের কর্মীদের তরফে রোগীদের সুপারের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তারপরই একদল রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন সুপারের অফিসে গিয়ে তাণ্ডব চালান। ওয়েটিং রুমের সেন্টার টেবিল উল্টে দেয়। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে। বাঁধা দিতে গিয়ে উত্তেজিত রোগীদের হাতে নিগৃহীত হন এক বেসরকারি সিকিউরিটি কর্মী। ঘটনার খবর পেয়ে মেডিক্যাল কলেজ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকে আটক করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: ‘‘যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিতে চায় না মমতার পুলিশ’’, সরব শুভেন্দু
এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী মমতা!
এদিন ঘটনার পরপরই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন জলপাইগুড়ি বিজেপি (BJP) সাংসদ জয়ন্ত রায়। জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন মঞ্চে ঘুরে সব খোঁজখবর নেন। এদিন সুপার অফিসে হামলার ঘটনার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেন। বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে অনমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছেন তার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি যদি ডাক্তারদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতেন তাহলে এই আন্দোলন চলত না। মানুষও পরিষেবা নিয়ে এধরনের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে তাণ্ডবের ঘটনা ঘটাতো না। এখনও যে হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাজ্য সরকার নিশ্চিত করতে পারেনি তা এদিনের এই ঘটনায় প্রমাণ হল। আসলে মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে লড়াই করছেন না। তাঁর লড়াই অন্যায়কে আড়াল করার। আরজি করকাণ্ডের অভিযুক্ত তাঁর কাছের লোকদের বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। সেজন্যই মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি অনমনীয় মনোভাব নিয়ে চলেছেন। এর পরিণতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। এর দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে। আগামীতে রাজ্য সরকারের নেতা মন্ত্রীদের এনিয়ে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হতে পারে।’’
কী বললেন হাসপাতালের সুপার?
সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘আমি অফিসে ছিলাম না। শুনেছি সাইক্রিয়াটিক আউটডোরে রোগীরা সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কোনও ডাক্তার ছিলেন না। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এসে ডাক্তার দেখাতে পারছেন না। সে কারণেই এদিন তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার অফিসে হামলা চালান। তবে, কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours