মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটি (Public Accounts Comittee) বা পিএসি (PAC)-র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুকুল রায় (Mukul Roy)। সোমবার বিধানসভার (West Bengal Assembly) অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) কাছে ই-মেল মারফৎ ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক।
গত শুক্রবার বিধানসভার অধিবেশনের শেষে স্পিকার আরও এক বছরের জন্য ৪১টি কমিটির মেয়াদ বাড়িয়েছিলেন। এর ফলে পিএসি চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়েরও মেয়াদ বাড়ে আরও এক বছর। কিন্তু এরই মধ্যে সোমবার পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করে স্পিকারকে ই-মেল করেন মুকুল। তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যজনিত কারণেই তিনি পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন।
মুকুলের পিএস চেয়ারম্যান পদে থাকা নিয়ে বিতর্ক অনেকদিন ধরেই চলছিল। এই নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি বঙ্গ রাজনীতিতে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে ভোটে লড়েন মুকুল রায়। তাতে তিনি জিতেওছিলেন। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের একমাসের মধ্যেই আচমকাই বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। কিন্তু, বিজেপির বিধায়ক পদ ত্যাগ করেননি মুকুল রায়।
এর কয়েকদিনের মধ্যেই মুকুল বিধানসভায় পিএসি-র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সাধারণত এই পদটি পায় বিরোধীরা। সে ক্ষেত্রে মুকুল দলবদল করায় কী ভাবে পিএসি চেয়ারম্যান করা হল তাঁকে, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই নিয়ে আপত্তি তুলেছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাদের দাবি ছিল যে, পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে বসতে পারেন বিরোধী দলের কোনও নেতা। কিন্তু মুকুল রায় তো শাসকদলে যোগ দিয়েছেন, তাহলে তিনি এই পদের যোগ্য নন।
এই নিয়ে বিধানসভার স্পিকারের কাছে অভিযোগ করা হয় বিজেপির তরফে। মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে সরব হয় পদ্ম-শিবির। যদিও, স্পিকার জানান যে, মুকুল রায় বিজেপির বিধায়ক। স্পিকারের এই রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু (Suvendu) অধিকারী। কিন্তু আদালতের নির্দেশে দু’বার স্পিকার জানিয়েছিলেন, মুকুল এখনও বিজেপিতেই রয়েছেন।
আরও পড়ুন: 'মুকুল বিজেপিতে', স্পিকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় দিলীপ
ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, মুকুলের ওপর চাপ বাড়ছিলই। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গত ১১ এপ্রিল সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বিধানসভার স্পিকারকে নির্দেশ দিয়েছিল৷ মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগদানের সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিও ফুটেজকেও প্রামাণ্য নথি হিসেবে গণ্য করতে বলেছিল আদালত৷ এরই মধ্যে, পিএসি সহ ৪১টি কমিটির মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বৃদ্ধি করেন বিধানসভার স্পিকার। তাই নতুন বিতর্ক এড়াতে পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুকুল।
+ There are no comments
Add yours