মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ছোট থেকেই পারে না হাঁটতে, পারে না কথা বলতে। মাধ্যমিকে এমনই যমজ দুই বোনের সাফল্যে উৎসাহিত গোটা নদিয়ার (Nadia) বাগআঁছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অদম্য চেষ্টা ও বাবামায়ের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে আজ স্বপ্নপূরণ বিশেষভাবে সক্ষম দুই বোনের।
কীভাবে চলেছিল পড়াশুনা
বড় মেয়ে (Nadia) রুমা মল্লিক। তার প্রাপ্ত নম্বর ৩২৪। ছোট মেয়ে ঝুমা মল্লিক, তার প্রাপ্ত নম্বর ৩২১। দুজনই জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। একজন কোনও রকমে চলাফেরা করতে পারলেও আরেকজন বিকলাঙ্গ। কানে যেমন শুনতে পারে না, বলতে পারে না কথাও। এভাবেই দুই বোন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। সংসার সামলানোর পাশাপাশি দুই প্রতিবন্ধী মেয়েকে কীভাবে পড়াশোনা করাবেন, তা নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকতেন মা রেখা মল্লিক। পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সময় অনেকটাই ভোগান্তিতে পড়তে হয় রুমা-ঝুমাকে। কারণ দুজনেই তো প্রতিবন্ধী, কীভাবে বিদ্যালয়ে (Nadia) যাবে? এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষক এবং শিক্ষিকারা। যদিও অনেক টানাপোড়নের পর বাবা-মা মেয়েদের ভর্তি করান বাগআঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। তারপর থেকেই নিয়মিত বিদ্যালয়ে পঠন পাঠনের জন্য যেত দুই বোন।
শিক্ষকদের বিশেষ ভূমিকা
অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে রুমা-ঝুমাকে বেশি নজর দিতেন স্কুলের শিক্ষকরা। মা রেখা মল্লিক জানিয়েছেন, মেয়েদের ভর্তি করানোর সময় একটু সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। মা বলেন, আজ যদি বিদ্যালয়ের (Nadia) শিক্ষক-শিক্ষিকারা পাশে না থাকত, তাহলে হয়তো মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেয়েরা সাফল্য পেত না।
আর্থিক সঙ্কটে আবেদন
বাবা শ্যামল মল্লিক টোটো গাড়ি চালিয়ে কোনওরকম সংসার চালান। মেয়েদের পড়াশোনার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তা জোগাড় করতেই হিমশিম খেয়ে যেতে হয়। তবুও হাল ছাড়েননি বাবা-মা। শ্যামল মল্লিক আক্ষেপের সুরে বলেন, পরিবারের দুরবস্থার কথা কে না জানে! আজ পর্যন্ত মেয়েরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করলেও কেউই পাশে দাঁড়ায়নি। বাড়িতে (Nadia) না এসেছে কোনও জনপ্রতিনিধি, না খোঁজ নিয়েছে প্রশাসন। সরকার যদি একটু আর্থিক সহায়তা করত, তাহলে মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হত। তবে হাজার কষ্ট করে হলেও মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন মা-বাবা দুজনেই। প্রতিবন্ধী দুই বোনের জন্য এখন কোনও সরকারি সহযোগিতা মেলে কি না, সেটাই এখন দেখার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours