মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ছত্তিশগড়ের একটি মাওবাদী নাশকতা এবং মাওবাদী সংগঠন সংক্রান্ত তদন্তে রাজ্যের (West Bengal) ৭ জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে এনআইএ (NIA)। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আসানসোল এবং পানিহাটিতে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর সদস্যদের নিয়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন এনআইএ আধিকারিকরা। তল্লাশি চলছে জগদ্দলেও। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুদীপ্তা পাল এবং শিপ্রা চক্রবর্তী নামের দুই মহিলার বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতেই তাদের এই অভিযান।
কোথায় কোথায় হানা? (NIA)
জানা গিয়েছে, ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় মাওবাদী নাশকতার ফান্ডিং ও সংগঠন সংক্রান্ত তদন্তে নেমে এ রাজ্যের সাত জায়গার নাম জানতে পারে এনআইএ (NIA)। তার ভিত্তিতেই তল্লাশি চালাচ্ছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোদপুরের পল্লিশ্রী এলাকায় মানবাধিকার কর্মী শিপ্রা চক্রবর্তী ও তাঁর স্বামী মানবেশ চক্রবর্তীর বাড়িতে তল্লাশি চলছে। আসানসোলের দুটি জায়গায় তল্লাশি চলছে। একজনের নাম অভিজ্ঞান সরকার, যিনি মূলত গবেষক হিসেবেই পরিচিত। যাদবপুরের এই প্রাক্তনী এর আগে সিঙ্গুর আন্দোলনেও যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। পরবর্তীকালে দেউচা পাচামি আন্দোলনের সময়েও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। অন্যদিকে, আসানসোলের সুদীপ্তা পাল, তিনিও একজন মানবাধিকার কর্মী। তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চলছে। তল্লাশি অভিযান চলছে আসানসোলের ডিসেরগড় এলাকাতেও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুদীপ্তা এবং শিপ্রা নানা সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কয়লাখনির শ্রমিকদের অধিকারের দাবিতেও সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। 'অধিকার' নামক একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। পরে 'মজদুর অধিকার' নামে একটি সংগঠন শুরু করেন এবং কয়লাখনির শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা আন্দোলন করেন। অভিযোগ, ছত্তিশগড়ের মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন সুদীপ্তা এবং শিপ্রা।
আরও পড়ুন: রাজ্যজুড়ে ফের কর্মবিরতি শুরু জুনিয়র ডাক্তারদের, সিদ্ধান্ত জিবি বৈঠকে
পাঁচিল টপকে বাড়িতে এনআইএ
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আসানসোলের একাধিক জায়গায় বাড়িভাড়া নিয়ে থেকেছেন সুদীপ্তা এবং শিপ্রা। বছর পাঁচেক আগে শিপ্রা আসানসোল থেকে চলে যান। তাঁর আসল বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির পল্লীশ্রী এলাকায়। তবে শিপ্রা পানিহাটি চলে যাওয়ার পর ডিসেরগড় এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতেই থাকতেন সুদীপ্তা। মঙ্গলবার সকালে পানিহাটি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লীশ্রী এলাকায় শিপ্রার বাড়িতে যান এনআইএ আধিকারিকেরা। প্রথমে ডাকাডাকি করা হলেও ভিতর থেকে দরজা খোলা হয়নি। পরে পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকেন এনআইএ (NIA) আধিকারিকরা। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
এনআইএ আধিকারিকের কী বক্তব্য?
এনআইএ (NIA) এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রত্যেকের সঙ্গেই মাওবাদী সংগঠনের যোগ রয়েছে। ‘আর্বান নকশাল’ হিসেবে তাঁরা চিহ্নিত। তাঁদের সঙ্গে ছত্তিশগড়ের নাশকতার কী যোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় আইইডি বিস্ফোরণে আহত হন সিআরপিএফ জওয়ান। আহতদের রায়পুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময়ে সিআরপিএফের ১৫৩ ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা টহল দিচ্ছিলেন। তখনই তাঁরা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) দেখতে পান। তাঁরা নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছিলেন, তখনই বিস্ফোরণ হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours