মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিজেপির অন্ধ ভক্ত। স্বামীও এক সময় সক্রিয় কর্মী ছিলেন। অভিযোগ, বিজেপি করায় জোটেনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি। তবুও থেমে থাকেননি। ৮৫ বছর বয়সে পঞ্চায়েতে বিজেপির প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কাঁকসার আমলাজোড়ার (Durgapur) উমারানী। এই বয়সে প্রার্থী হয়ে যেমন দলের যুব কর্মীদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, তেমনই পঞ্চায়েত ভোটে নতুন চমক বিজেপির।
কে এই উমারানী মিশ্র (Durgapur)?
বয়স ৮৫। বয়সের ভারে শ্রবণশক্তি কমেছে। পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা ব্লকের আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের ধোবাঘাট গ্রামের বাসিন্দা। দুই ছেলের মধ্যে বছর কয়েক আগে এক ছেলে মারা গেছেন। স্বামীরও মৃত্যু হয়েছে। অনটনের সংসার। বার্ধ্যকভাতা যেটুকু পান, তাতে কোনওভাবে সংসার চলে। স্বামী কুবীর মিশ্র বামফ্রন্টের দোর্দণ্ড প্রতাপের সময় সক্রিয় বিজেপি কর্মী ছিলেন। দীর্ঘ ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিজেপির অন্ধ ভক্ত উমারানী। বছর কুড়ি আগে আমলাজোড়ার বিহারপুর গ্রাম থেকে (Durgapur) বিজেপির হয়ে প্রথম প্রার্থী হয়েছিলেন। ৮৫ বছর বয়সেও সাহস ও ইচ্ছাশক্তি প্রবল এবং সক্রিয় বিজেপি কর্মী। নরেন্দ্র মোদির অন্ধ ভক্ত। বিজেপি করার অপরাধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়িটুকুও জোটেনি বলে অভিযোগ উমাদেবীর। সম্প্রতি রাজ্য ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব উমাদেবীকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে।
কী বলছেন ৮৫ বছরের এই প্রার্থী (Durgapur)?
কাঁকসার আমলাজোড়া অঞ্চলের ২৭৬ নং গ্রাম সংসদে বিজেপি প্রার্থী উমারানী মিশ্র। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর ইতিমধ্যে প্রচারও (Durgapur) শুরু করেছেন। এই বয়সে কেন প্রার্থী হয়েছেন? প্রশ্ন করতেই উমাদেবীর সপাটে জবাব, "স্বামী একনিষ্ঠ বিজেপি কর্মী ছিলেন। আমি বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির অন্ধ ভক্ত। করোনা আবহে লকডাউনে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। উজ্বালা যোজনায় গ্যাস। প্রত্যেকের পাকা বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। আয়ুষ্মান কার্ড, যেটা রাজ্যে চালু করতে দেয়নি তৃণমূল, তার জন্য আমাদের মতো গরিব মানুষকে চিকিৎসা করাতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। কেন্দ্র সরকারের উন্নয়নমুলক কাজে আপ্লুত। তাই নরেন্দ্র মোদির অন্ধ ভক্ত। বিজেপিই একমাত্র গরিব মানুষের সাহারা। তাই এই বয়সে প্রার্থী হয়েছি।" তিনি আরও বলেন," গ্রামের মানুষের চাপে বার্ধক্যভাতাটুকু চালু করেছে। বিজেপি করায় আমাকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি দেয়নি তৃণমূল সরকার। তাই রাজ্য থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল নামক জগদ্দল পাথরটাকে সরাতে প্রার্থী হয়েছি।" জেতার বিষয়ে উমাদেবী বলেন," আমাদের মতো অসহায় বয়স্ক মানুষের জন্য কাজ করব। গ্রামের মানুষ খুব ভালোবাসে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে, মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে আমি অবশ্যই জিতব।"
কী বলছে তৃণমূল নেতৃত্ব (Durgapur)?
উমাদেবীর অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় Durgapur তৃণমূল নেতৃত্ব। আমলাজোড়া পঞ্চায়েত প্রধান চয়নিকা পাল বলেন, "উমাদেবীর দুই ছেলে। এক ছেলে মারা গেছেন। দুই ছেলের পরিবারের দুটি জব কার্ড। উমাদেবীর আলাদা কোনও জবকার্ড নেই। উমাদেবীর নাম এক বৌমা লক্ষ্মী মিশ্রর জবকার্ডে সংযুক্ত রয়েছে। দুটি পরিবারের দুটি জবকার্ডে আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছে। জবকার্ড অনুযায়ী আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়া হয়েছে।"
কী বলছে বিজেপি (Durgapur)?
প্রসঙ্গত, গত ২০১৯ সালের লোকসভা ও ২০২১ সালের বিধানসভার নিরিখে আমলাজোড়া অঞ্চলের ধোবাঘাট গ্রামে (Durgapur) বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে। তাই স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বও উমাদেবীর জয়ের বিষয়ে অনেকটাই আশাবাদী। স্থানীয় বিজেপিকর্মী অসীম ঘড়ুই, প্রসেঞ্জিত বাগদী বলেন," ঠাকুমা এবারে জিতবে। গ্রামের মানুষ তৃণমূলের অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ চাইছে। দু হাত তুলে সমর্থন করছে বিজেপিকে।" উল্লেখ্য, বিজেপির প্রত্যেক নির্বাচনে প্রার্থী পদে চমক রাখে। গত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার শালতোড়া আসনে রাজমিস্ত্রির পরিবার থেকে চন্দনা বাউরীকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল। এছাড়াও আউশগ্রাম বিধানসভায় পরিচারিকা কলিতা মাজিকে প্রার্থী করে বড় চমক দিয়েছিল। চন্দনা বাউরী বিপুল ভোটে জয়ীও হয়েছেন। তবে কলিতা মাজি টক্কর দিয়ে কয়েক হাজার ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হয়েছেন। বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই বলেন," উমারানী আমাদের গর্ব। বামফ্রন্টের দোর্দণ্ড প্রতাপের সম প্রার্থী হয়েছিলেন। এখন তৃণমূলের অত্যাচার থেকে গ্রামবাসীকে পরিত্রাণ দিতে প্রার্থী হয়েছেন। উমাদেবীর সাহসিকতা বিজেপির অনুপ্রেরণা।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours