মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজই শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর প্রথমদিনেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়কে তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। ১২ বছরের পুরনো একটি মামলায় নির্দেশ না মানায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে ডেকে পাঠানো হয়েছিল আজ। এদিন বিচারপতি অমৃতা সিংহের সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁকে আদালতে গিয়ে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। অভিযোগ, ১২ বছর ধরে চাকরি পাননি পূর্ব মেদিনীপুরের অঞ্জনকুমার খাটুয়া। গত মাসে কলকাতা হাইকোর্ট তাঁকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই মত অঞ্জনের সুপারিশ পত্র পর্ষদকে পাঠায় এসএসসি। কিন্তু তার পরও চাকরি দেয়নি পর্ষদ৷ এর পর আজই হাইকোর্টে শুনানি কক্ষের মধ্যেই হাতে হাতে নিয়োগপত্র পেলেন এক মামলাকারী।
ঠিক কী ঘটেছে?
সূত্রের খবর, যোগ্য হয়েও ১২ বছর ধরে চাকরি পাননি অঞ্জনকুমার খাটুয়া নামে ওই ব্যক্তি। তাঁর একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি নেই। গত মাসে তাঁকে শীঘ্রই নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এরপর অঞ্জনবাবুর সুপারিশপত্র পর্ষদকে পাঠায় এসএসসি। তারপরও তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এই জন্য পর্ষদের অফিসেও যান ওই ব্যক্তি। পর্ষদ অফিসে চাকরিপ্রার্থীকে অপমান করা হয় বলে অভিযোগ। কমিশনের সুপারিশপত্র পাওয়ার পরও ওই ব্যক্তিকে এখনও নিয়োগ করা হয়নি। এদিন এই মামলা ওঠে হাইকোর্টে। আর তখনই পর্ষদ সভাপতিকে ডেকে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে পর্ষদ দাবি করে, অঞ্জনের নিয়োগপত্র অনেক দিন ধরেই তৈরি হয়ে রয়েছে। পর্ষদের আইনজীবীও আদালতকে একই কথা জানান। তাঁর দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশ মত অঞ্জনের নিয়োগপত্র তৈরিই আছে। কিন্তু অঞ্জন তা সংগ্রহ করেননি। যদিও অঞ্জনের আইনজীবী সুভাষ জানার অভিযোগ, তাঁর মক্কেল পর্ষদের দফতরে নিয়োগপত্র আনতে গেলে তাঁকে হেনস্থা করা হয়। নিয়োগপত্র তাঁর মক্কেল হাতে পাননি। আবার পর্ষদের আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, প্রার্থীকে বোর্ডের অফিসে হেনস্থার অভিযোগ ভিত্তিহীন। এমন কোনও কথা কেউ বলেনি। মন গড়া অভিযোগ করা হচ্ছে।
বিচারপতির নির্দেশ
উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি অমৃতা সিংহই নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অঞ্জনকে নিয়োগপত্র না দিলে ২৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়কে সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। যদিও বৃহস্পতিবার পর্ষদ সভাপতি আদালতে হাজিরা দেননি। এদিন বিচারপতি অমৃতা সিংহের সিঙ্গল বেঞ্চ বলেন, “এত বছর ধরে একজন ঘুরছে তারপরও আপনারা তাঁকে ঘোরাচ্ছেন। এটাই এখনকার পরিস্থিতি।” এর পর দু’পক্ষের কথা শোনার পর বিচারপতি নির্দেশ দেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অঞ্জনকুমার খাটুয়া নামের ওই ব্যক্তিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরে গিয়ে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করতে হবে। একই সঙ্গে পর্ষদকে বিচারপতি অমৃতা সিংহ নির্দেশ দিয়েছেন, শুক্রবারের মধ্যে ওই নিয়োগপত্র মামলাকারীর হাতে তুলে দিতে হবে।
এছাড়াও অঞ্জনের হেনস্থার প্রসঙ্গে বিচারপতির মন্তব্য, “হেনস্থার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক, না ভুল, তা জানি না। তবে ওখানে কী হয়, সেটা এখন ওপেন সিক্রেট। কিন্তু আমাদের চোখ খোলা রয়েছে।” অঞ্জনের হেনস্থার অভিযোগও গৃহীত হয়েছে কোর্টে। বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী দিনে ওই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। আগামী ১৬ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
+ There are no comments
Add yours