মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১১ ডিসেম্বর প্রাথমিকের টেট (Primary TET 2022) পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে দাবি করা হয় যে, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে বিবাহিত মহিলাদের শাঁখা-পলা খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধী দল বিজেপিও। আর এর পরেই এই অভিযোগে পর্ষদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।
টেট পরীক্ষা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা
প্রাথমিক টেট নিয়ে দূর্নীতির তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ থেকে, স্বজনপোষণ সহ একাধিক অভিযোগে জর্জরিত রাজ্য সরকার। আর এই পরিস্থিতিতেই ফের পর্ষদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল। প্রাথমিক টেট পরীক্ষা কেন্দ্রে হিন্দু মেয়েদের হাত থেকে শাঁখা-পলা খোলানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন মৌমিতা চক্রবর্তী নামে এক চাকরিপ্রার্থী। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদিকা পারমিতা দে এই বিষয়ে আদালতে প্রশ্ন তুলেছেন যে, ‘কেন এই কারণে পরীক্ষা দিতে পারলেন না চাকরিপ্রার্থী? তার যে ক্ষতি হল সেটা কে পূরণ করবে?’ মামলাকারীর অভিযোগ সরাসরি পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: শাঁখা-পলা পরে টেট পরীক্ষায় বসতে বাধা, তীব্র প্রতিক্রিয়া বিজেপি বিধায়কের
বিজেপি মহিলা মোর্চা কর্মীদের প্রতিবাদ
শুধুমাত্র এক জায়গা থেকে অভিযোগ উঠে আসেনি। শাঁখা-পলা-নোয়া পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠে আসে একাধিক জেলা থেকে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এহেন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে গেরুয়া শিবির। গত বুধবার এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি মহিলা মোর্চা কর্মীদের পথে নামতেও দেখা যায় জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুরে।
শাঁখা, পলা খুলে টেট পরীক্ষা দিতে হবে। এই নিয়মের বেড়াজালে টেট পরীক্ষাই দেওয়া হয়নি জলপাইগুড়ির এক গৃহবধূর। জলপাইগুড়ি সেবাগ্রামের গৃহবধূ মৌমিতা চক্রবর্তী জানান, “দীর্ঘদিন বাদে এবারের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা দিয়ে একটা চাকরি পাব আশা করেছিলাম৷ জলপাইগুড়ি দেবনগরের সতীশলাহিড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী কোনও অলঙ্কার পরে যাওয়া যাবে না। তাই বাড়িতেই সমস্ত সোনার গয়না খুলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে থাকা পুলিশ কর্মীরা আমার শাঁখা ও পলা খুলতে বলে। আমি খুলতে পারব না জানিয়ে দিই। কারণ বিয়ের পর থেকে আমি শাঁখা পলা হাত থেকে খুলিনি। এবারও খুলতে না পারায় তাই পরীক্ষা কেন্দ্রে না ঢুকতে পেরে বাড়ি চলে আসি।”
আর এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির মহিলা মোর্চার সমর্থকরা বুধবার ডিবিসি রোডের অফিস থেকে মিছিল করে কোতয়ালি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। আর এবারে পর্ষদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলাও করা হল। চলতি সপ্তাহে মামলার শুনানির সম্ভাবনা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।
+ There are no comments
Add yours