মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শ্রীলঙ্কায় (Sri Lanka) প্রেসিডেন্টের (President) প্রাসাদ, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের পর এবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরও (PM Office) দখল নিলেন বিক্ষোভকারীরা (Protesters)। তাদের হঠাতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার কলম্বোয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বাইরে অন্তত কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হন। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন তাঁরা। দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ।
চিনা ঋণ নীতির ফাঁদে পড়ে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দেশে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার শূন্য। স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে পড়েছে জ্বালানি, সংবাদপত্র ছাপার কাগজ সহ আরও নানা জিনিসপত্রের আমদানি। হু হু করে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। জ্বালানির অভাবে প্রায় বন্ধ বিদ্যুৎ উৎপাদন। তার জেরে ফি দিন প্রায় ১৩ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে দেশে। দেশের এহেন পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্টকেই দুষছেন দ্বীপরাষ্ট্রবাসী। জনরোষ আঁচ করে রাতের অন্ধকারে সপরিবারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তাঁর ভবনের দখল নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এদিন নিলেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরও। এক টেলিভিশন বার্তায় প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রম সিংহে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেনা ও পুলিশকে। যদিও নিরাপত্তা রক্ষীদের সামনেই প্রধানমন্ত্রীর ভবনের দখল নিয়েছে জনতা। তাদের কেউ কেউ হাতে তুলে নিয়েছে জাতীয় পতাকা, কেউ কেউ আবার সেটি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করছে। পরে তুলছে ছবিও। বিদ্রোহীদের একাংশ জাতীয় টেলিভিশন স্টুডিওয়ও ঢুকে পড়েন।
আরও পড়ুন : রাজনৈতিক পটবদল, আগামী সপ্তাহেই নতুন রাষ্ট্রপতি পাবে শ্রীলঙ্কা
এদিকে, প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিতে দেশের কার্যকরী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের হাতে। তাঁর নিজের অফিসের দখলও নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে ফাটানো হয়েছে কাঁদানে গ্যাসের সেল, ছোড়া হয়েছে জল কামান, দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। কোথাও কোথাও জারি করা হয়েছে কারফিউ। তার পরেও ছত্রভঙ্গ করা যায়নি বিক্ষোভকারীদের। কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের এক নেতা কল্পনা মধুভাসানি বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা চাপিয়ে দেওয়া বেআইনি জরুরি অবস্থা আমরা মানি না। আমরা চাই গোতাবায়া এবং রনিল দুজনেই ভাগুক। জরুরি অবস্থা জারি করার প্রয়োজন ওঁদের নেই। তিনি বলেন, জনতাকে রক্ষা করতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়নি, শ্রীলঙ্কাবাসীকে দমন করতেই জারি হয়েছে এমার্জেন্সি।
আরও পড়ুন : দেনার দায়ে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়াল ভারত, স্বাগত জানালেন সনৎ জয়সূর্য
+ There are no comments
Add yours