Puri Chappanna Bhog: রথযাত্রায় জগন্নাথদেবকে দেওয়া হয় বিশেষ ছাপ্পান্ন ভোগ, কী এর মাহাত্ম্য?

Rath Yatra 2024: রথযাত্রার দিন পুরীর মন্দিরে চড়ানো হয় ৫৬ ভোগ, কী কী পদ থাকে জানেন?...
chappanna-bhog-resizejpg
chappanna-bhog-resizejpg

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রথের দিনগুলিতে (Rath Yatra 2024) পুরীতে তুমুল আয়োজন পুরীর জগন্নাথধামে৷ রথযাত্রার একাধিক উপাচারের অন্যতম আকর্ষণ হল জগন্নাথদেবকে ৫৬ ভোগ (Puri Chappanna Bhog) নিবেদন। ৫৬ ভোগের রাজকীয় সেই খাবারের পদগুলি থেকে নিয়ম সবক্ষেত্রেই পাওয়া যায় পুরাণকথার একাধিক আঙ্গিক। কিন্ত কেন দেওয়া হয় এই বিশেষ ভোগ? 

৫৬ ভোগ নিয়ে কী বলছে পুরাণ? (Puri Chappanna Bhog)

পুরাণ মতে, যশোদা বালক কৃষ্ণকে আট প্রহর খেতে দিতেন। কিন্তু, একটা সময় ইন্দ্রের রোষে পড়ে মহাপ্রলয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় প্রাণীদের রক্ষা করতে নিজের কনিষ্ঠ আঙুলে গোবর্ধন পাহাড় তুলে নিয়েছিলেন তিনি। সাতদিন ওইভাবেই তিনি ছিলেন। খাবার ও জল কোনও কিছুই মুখে দেননি। প্রলয় বন্ধ হওয়ার পর সেই পাহাড় নামিয়ে রেখেছিলেন। এদিকে যে ছেলে দিনে আটবার খাবার খেত তাকে টানা সাতদিন অনাহারে থাকতে দেখে কেঁদে উঠেছিল যশোদার মন। তখন ব্রজবাসী-সহ যশোদা সাতদিন ও আট প্রহরের হিসেবে কৃষ্ণের জন্য ৫৬টি পদ পরিবেশন করেছিলেন। আর সেই থেকেই নারায়ণের ছাপ্পান্ন ভোগ (Puri Chappanna Bhog) চলে আসছে।

মর্ত্যে এসে চার ধাম যাত্রা করেন ভগবান বিষ্ণু...

এও কথিত আছে, ভগবান বিষ্ণু মর্ত্যলোকে এসে তাঁর চার ধামে যাত্রা করেন। এই চার ধাম হল- বদ্রীনাথ ধাম, দ্বারিকা ধাম, পুরী ধাম এবং রামেশ্বরম। প্রথমে হিমালয়ের শিখরে অবস্থিত বদ্রীনাথ ধামে স্নান করেন, তারপর গুজরাটের দ্বারিকা ধামে গিয়ে বস্ত্র পরিধান করেন, ওড়িশার পুরী ধামে ভোজন করেন আর সবশেষে রামেশ্বরমে গিয়ে বিশ্রাম নেন। আর পুরী ধামে যেখানে তিনি ভোজন করেন সেখানে ভোগের কোনও চমক থাকবে না এটা কখনও হয়। পুরাণ মতে, ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার কৃষ্ণের সঙ্গে বিশেষভাবে যুক্ত করা হয় জগন্নাথদেবকে। জগন্নাথের মধ্যে বিষ্ণুর সকল অবতারের চিহ্ন আছে। আর সেই কারণে তাঁকেও অর্পণ করা হয় ছাপান্ন ভোগ। 

কী কী পদ থাকে এই ছাপ্পান্ন ভোগে? 

জগন্নাথকে দেওয়া ৫৬ ভোগে (Puri Chappanna Bhog) রাখা হয়— ১) উকখুড়া অর্থাৎ মুড়ি, ২) নাড়িয়া কোড়া অর্থাৎ নারকেল নাড়ু, ৩) খুয়া অর্থাৎ খোয়া ক্ষীর, ৪) দই, ৫) পাচিলা কদলি অর্থাৎ পাকা কলা, ৬) কণিকা অর্থাৎ সুগন্ধী ভাত, ৭) টাটা খিচুড়ি অর্থাৎ শুকনো খিচুড়ি, ৮) মেন্ধা মুণ্ডিয়া অর্থাৎ বিশেষ ধরণের কেক, ৯) বড়া কান্তি অর্থাৎ বড় কেক, ১০) মাথা পুলি অর্থাৎ পুলি পিঠে, ১১) হামসা কেলি অর্থাৎ মিষ্টি কেক, ১২) ঝিলি অর্থাৎ এক ধরণের প্যান কেক, ১৩) এন্ডুরি অর্থাৎ নারকেল দিয়ে তৈরি কেক, ১৪) আদাপচেদি অর্থাৎ আদা দিয়ে তৈরি চাটনি, ১৫) শাক ভাজা, ১৬) মরিচ লাড্ডু অর্থাৎ লঙ্কার লাড্ডু, ১৭) করলা ভাজা, ১৮) ছোট্ট পিঠে, ১৯) বরা অর্থাৎ দুধ তৈরি মিষ্টি, ২০) আরিশা অর্থাৎ ভাত দিয়ে তৈরি মিষ্টি, ২১) বুন্দিয়া অর্থাৎ বোঁদে, ২২) পাখাল অর্থাৎ পান্তা ভাত, ২৩) খিরি অর্থাৎ পায়েস, ২৪) কাদামবা অর্থাৎ বিশেষ মিষ্টি ২৫) পাত মনোহার মিষ্টি ২৬) তাকুয়া মিষ্টি, ২৭) ভাগ পিঠে, ২৮) গোটাই অর্থাৎ নিমকি, ২৯) দলমা অর্থাৎ ভাত ও সবজি, ৩০) কাকারা মিষ্টি ৷ ৩১) লুনি খুরুমা অর্থাৎ নোনতা বিস্কুট, ৩২) আমালু অর্থাৎ মিষ্টি লুচি, ৩৩) বিড়ি পিঠে, ৩৪) চাড়াই নাডা মিষ্টি, ৩৫) খাস্তা পুরি, ৩৬) কদলি বরা, ৩৭) মাধু রুচি অর্থাৎ মিষ্টি চাটনি, ৩৮) সানা আরিশা অর্থাৎ রাইস কেক, ৩৯) পদ্ম পিঠে, ৪০) পিঠে, ৪১) কানজি অর্থাৎ চাল দিয়ে বিশেষ মিষ্টি. ৪২) দাহি পাখাল অর্থাৎ দই ভাত, ৪৩) বড় আরিশা, ৪৪) ত্রিপুরি, ৪৫) সাকারা অর্থাৎ সুগার ক্যান্ডি, ৪৬) সুজি ক্ষীর, ৪৭) মুগা সিজা, ৪৮) মনোহরা মিষ্টি, ৪৯) মাগাজা লাড্ডু, ৫০) পানা, ৫১) অন্ন, ৫২) ঘি ভাত, ৫৩) ডাল, ৫৪) বেসর অর্থাৎ সবজি বিশেষ, ৫৫) মাহুর অর্থাৎ লাবরা, ৫৬) সাগা নাড়িয়া অর্থাৎ নারকেলের দুধ দিয়ে মাখা ভাত। (Rath Yatra 2024)

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles