পঞ্চম পরিচ্ছেদ
কীর্তনানন্দ নরেন্দ্র প্রভৃতি সঙ্গে—নরেন্দ্রকে প্রেমালিঙ্গন
ঈশ্বরকথাই কথা—আত্মানং বা বিজানীথ অন্যাং বাচং বিমুঞ্চখ
এইরূপ কথাবার্তা চলিতেছে, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ঘরের ভিতর হইতে তাঁহাদের কাছে আসিলেন ও হাসিতে হাসিতে বলিতেছেন, কি গো, তোমাদের কি কথা হচ্ছে? নরেন্দ্র বলিলেন, এঁর সঙ্গে স্কুলের কথাবার্তা হচ্ছিল। ছেলেদের চরিত্র ভাল থাকেনা। ঠাকুর একটু ওই সকল কথা শুনিয়া মাস্টারকে গম্ভীরভাবে বলিতেছেন, “এ-সব কথাবার্তা ভাল নয়। ঈশ্বরের কথা (Kathamrita) বই অন্য কথা ভাল নয়। তুমি এদের চেয়ে বয়সে বড়, বুদ্ধি হয়েছে, তোমার এ-সব কথা তুলতে দেওয়া উচিত হয় ছিল না।” (নরেন্দ্রর বয়স তখন ১৯/১২, মাস্টারের ২৭/২৮)
মাস্টার অপ্রস্তুত। নরেন্দ্রাদি ভক্তগণ চুপ করিয়া রহিলেন।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) দাঁড়াইয়া হাসিতে হাসিতে নরেন্দ্রাদি ভক্তগণকে খাওয়াইতেছেন। ঠাকুরের আজ মহা আনন্দ।
নরেন্দ্রাদি ভক্তেরা আহার করিয়া ঠাকুরের ঘরের মেঝেতে বসিয়া বিশ্রাম করিতেছেন ও ঠাকুরের সঙ্গে গল্প (Kathamrita) করিতেছেন। আনন্দের হাট বসিয়াছে। কথা কহিতে কহিতে নরেন্দ্রকে ঠাকুর বলিতেছেন, চিদাকাশে হল পূর্ণ প্রেমচন্দ্রোদয় হে এই গানটি একবার গা না।
নরেন্দ্র গাহিতে আরম্ভ করিলেন। অমনি সঙ্গে সঙ্গে খোল করতাল অন্য ভক্তগণ বাজাইতে লাগিলেন;
চিদাকাশে হল পূর্ণ প্রেমচন্দ্রোদয় হে।
উথলিল প্রেমসিন্ধু কি আনন্দময় হে।
(জয় দয়াময়, জয় দয়াময়, জয় দয়াময়)
স্বর্গের দুয়ার খুলি, আনন্দ-লহরী তুলি;
নববিধান-বসন্ত-সমীরণ বয়,
ছুটে তাহে মন্দ মন্দ লীলারস প্রেমগন্ধ,
ঘ্রাণে যোগিবৃন্দ যোগানন্দে মত্ত হয় হে।
(জয় দয়াময়, জয় দয়াময়, জয় দয়াময়)
ভবসিন্ধুজলে, বিধান-কমলে, আনন্দময়ী বিরাজে,
আবেশে আকুল, ভক্ত অলিকুল, পিয়ে সুধা তার মাঝে।
দেখ দেখ মায়ের প্রসন্নবদন চিত্ত-বিনোদ ভুবন-মোহন,
পদতলে দলে দলে সাধুগণ, নাচে গায় প্রেমে হইয়া মগন
কিবা অপরূপে আহা মরি মরি, জুড়াইল প্রাণ দর্শন করি
প্রেমদাসে বলে সবে পায়ে ধরি, গাও ভাই মায়ের জয়।।
কীর্তন করিতে করিতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) নৃত্য করিতেছেন। ভক্তেরাও তাঁহাকে বেড়িয়া নৃত্য করিতেছেন। তেরাও তাঁহাকে বেড়িয়া নৃত্য করিতেছেন।
আরও পড়ুনঃ"হৃদি-কমলাসনে ভাব তাঁর চরণ, দেখ শান্ত মনে, প্রেমনয়নে, অপরূপ প্রিয়দর্শন"
আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”
আরও পড়ুনঃ “সচ্চিদানন্দলাভ হলে সমাধি হয়, তখন কর্মত্যাগ হয়ে যায়”
আরও পড়ুনঃ “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours