মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: করোনার থেকে এখনও সেরে ওঠেনি বিশ্ব। আর তার ওপর নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মাঙ্কি পক্স (Monkey Pox)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসকে অতিমারীর তকমা দিয়েছে। বিশ্বে প্রায় ১৮,৮৩৬ জন মানুষ ইতিমধ্যেই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। করোনার মতো মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের গ্রাফও ঊর্ধ্বমুখী। অবস্থার অবনতি দেখে করোনার মতো মাঙ্কি পক্স নিয়েও জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেছে হু।
আরও পড়ুন: মাঙ্কি পক্স ভাইরাসের পৃথকীকরণে সফল ভারত, জানাল এইআইভি
মাঙ্কি পক্সের সমস্ত উপসর্গগুলি প্রায় গুটি বসন্তের মতো। তবে সম্প্রতি চিকিৎসকদের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন, মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে নতুন উপসর্গ (Symptoms) শনাক্ত করেছে। মাঙ্কি পক্সে বড় বড় ফুসকুড়ি দেখা যায়। এই উপসর্গের কথা আগেই শুনেছেন সবাই। কিন্তু এর সঙ্গে চিকিৎসকরা শনাক্ত করেছেন আরও তিনটি উপসর্গ। যা আগে ছিল না। সেগুলো হল, যৌনাঙ্গে ঘা, মুখে ঘা এবং মলদ্বারে ঘা।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত প্রতি দশজনে একজনের যৌনাঙ্গে ঘা এবং ১৫ শতাংশের পায়ু বা মলদ্বারে ব্যথা হচ্ছে। মাঙ্কি পক্সের এই উপসর্গগুলি অনেকটাই সিফিলিস বা হারপিসের মতো। ফলে অনেক সময় রোগ নির্ণয় করতে বিপদে পড়ছেন চিকিৎসকরা। গবেষকরা দেখেছেন, ভুল রোগ নির্ণয়ের ফলে মাঙ্কি পক্স শনাক্ত করতে দেরি হয়ে যাওয়ায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। ফলে চিকিৎসা করতেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু মানুষ মলদ্বারের ব্যথায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত তিনজন বর্তমানে সুস্থ, জানালেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এই ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, সময়ে রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসা হলে মাঙ্কি পক্স নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাঁরা আরও বলছেন, এই মুখে ঘা, যৌনাঙ্গে ব্যথা কিংবা ঘা পরবর্তীতে গুরুতর আকার নিতে পারে। তাই সময়ে চিকিৎসা করানো গুরুত্বপূর্ণ।
লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল সিনিয়র লেকচারার, যৌন স্বাস্থ্য এবং এইচআইভি পরামর্শদাতা এবং চিকিৎসক জন থর্নহিল এ বিষয়ে বলেন, "এটা বুঝতে হবে যে মাঙ্কি পক্স যৌন সংক্রমণ নয়। ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগ হলেও এটা অন্যের শরীরে ছড়াতে পারে। এখনও পর্যন্ত যৌন সম্পর্ক থেকে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হয়েছেন অধিকাংশ রোগী। কিন্তু তারপরেও মনে রাখতে হবে, এটা শুধুই যৌন সম্পর্কের ব্যাপার নয়। নতুন উপসর্গ থেকে কীভাবে মাঙ্কি পক্স ছড়াচ্ছে, গোষ্ঠী সংক্রমণের ঝুঁকি কতটা, এগুলো বুঝতে পারলেই শনাক্তকরণ সহজ হয়ে যাবে এবং ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণেও রাখা যাবে।"
+ There are no comments
Add yours