Delhi-Mehrauli Murder: ধর্ম পরিবর্তনে রাজি না হওয়াতেই কি খুন শ্রদ্ধা? দিল্লির নৃশংস হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়

আফতাবের সঙ্গে সম্পর্কের পরই বদলে যায় মেয়ে, দাবি শ্রদ্ধার বাবার
Shraddha-walkar-1
Shraddha-walkar-1

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাবা-মা কে ছেড়ে ভালবেসে ঘর ছেড়েছিলেন মহারাষ্ট্রের হিন্দু পরিবারের মেয়ে শ্রদ্ধা ওয়েলকার। সম্পর্ক গড়েছিলেন এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে। আফতাব আমিন পুনাওয়ালার সঙ্গে লিভ-ইন করছিলেন। বিয়ের জন্য প্রেমিককে চাপ দেওয়াতেই তাঁকে খুন (Delhi-Mehrauli Murder) করে আফতাব। পুলিশকে তাই জানিয়েছে সে। কিন্তু শ্রদ্ধার বন্ধুর দাবি, লিভ-ইন ছেড়ে বিয়ের কথা বলতেই শ্রদ্ধাকে ধর্ম পরিবর্তন করতে জোর করে  আফতাব। তাতে মত দেয়নি শ্রদ্ধা। পরিবার ত্যাগ করলেও ধর্ম ছাড়তে হয়ত রাজি ছিলেন না তিনি। তাই এই পরিণতি। ধর্মান্তরণের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশও। 

শ্রদ্ধার বাবার দাবি

আফতাব আমিন পুনাওয়ালার সঙ্গে আলাপ হওয়ার পরই তাঁর মেয়ে বদলে গিয়েছিল। এমনই দাবি করলেন দিল্লিতে নৃশংস হত্যার শিকার শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়েলকার। তাঁর দাবি, “শ্রদ্ধা খুব ভাল মেয়ে ছিল। ফ্যাশন ট্যাশন কিছু করত না। একদম সাধারণভাবে থাকত। যখন থেকে ও প্রথম চাকরি করা শুরু করেছিল এবং ওর সঙ্গে এই ছেলেটির দেখা হয়েছিল, তখন থেকেই লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এসেছিল শ্রদ্ধার।” ভিন্ন ধর্ম, অন্য পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা আফতাবের সঙ্গে সম্পর্কে যেতে দিতে রাজি ছিল না শ্রদ্ধার পরিবার। তাই বাড়ি ছাড়েন শ্রদ্ধা। কিন্তু বাড়ি ছাড়লেও শ্রদ্ধার বন্ধুর অনুমান, নিজের ধর্ম-ত্যাগ করতে রাজি ছিল না হিন্দু পরিবারের মেয়ে।  

শ্রদ্ধার ছোটবেলার বন্ধু লক্ষ্মণ নাদার জানান, মাঝেমাঝেই শ্রদ্ধার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত আফতাব।  সে কথা শ্রদ্ধা তাঁকে জানিয়েছিল। শ্রদ্ধাকে সে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথাও বলে। এমনকী, আফতাবকে ভয়ও দেখায় পুলিশকে জানিয়ে দেবে বলে। লক্ষ্মণ বলেন, আফতাব তখনই শ্রদ্ধার থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়। তারপর শ্রদ্ধাই লক্ষ্মণকে পুলিশে যেতে আটকায়। শ্রদ্ধার পরিবার সূত্রে খবর, মা ও বাবাকেও আফতাবের ব্যবহারের কথা জানিয়েছিল শ্রদ্ধা কিন্তু সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে রাজি ছিল না।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে হিন্দু লিভ-ইন পার্টনারকে খুন করে দেহ ৩৫ টুকরো করল মুসলিম যুবক

তদন্তে নয়া দিক

পুলিশকে জেরায় আফতাব জানিয়েছে খুনের এক সপ্তাহ আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিল সে। শ্রদ্ধা তাকে সন্দেহ করত। ফোনে কারুর সঙ্গে কথা বললে বিরক্ত হত। তার প্রতি শ্রদ্ধা অবিশ্বাস করত বলেই বিরক্ত হয়ে শ্রদ্ধাকে শেষ করার কথা ভাবে সে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধার দেহ মাটিতে পুঁতে দিলে বা কোথাও ফেললে ধরা পড়তে পারে এই আশঙ্কাতেই দেহ ৩৫ টুকরো করে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল আফতাব। পরে তা জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পুঁতে ফেলা হয়েছিল। সেই সময়ও বাড়িতে নতুন বান্ধবীদের নিয়ে এসেছিল অভিযুক্ত আফতাব। ডেটিং অ্যাপ বাম্বেলেই তাঁদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল আফতাবের। এবার দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কোন কোন মহিলার সঙ্গে আফতাবের সাক্ষাৎ হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য হাতে পেতে এবার বাম্বল ডেটিং অ্যাপকে চিঠি পাঠাতে পারে দিল্লি পুলিশ।  শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের (Delhi-Mehrauli Murder) পিছনে সেই মহিলাদের কোনও হাত ছিল কিনা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চায় পুলিশ।

পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তের অগ্রগতির স্বার্থে প্রমাণ উদ্ধারের জন্য একাধিক দল মোতায়েন করা হয়েছে । সবার আগে শ্রদ্ধার শরীরের টুকরো অংশগুলি খুঁজে বের করতে চায় পুলিশ। এখনও পর্যন্ত শরীরের ১৩টি টুকরো পাওয়া গিয়েছে । বেশিরভাগই হাড় । এখনও ,মাথা, ধড় কিংবা শরীরের অন্য কোনও অংশ খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা দেখে শ্রদ্ধাকে সনাক্ত করা যেতে পারে । মেহরাউলি জঙ্গলে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ । কিন্তু, এত বড়, ঘন জঙ্গলে শরীরের টুকরো অংশগুলি খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন বলে জানাচ্ছে দিল্লি পুলিশ। ছয় মাস হয়ে গিয়েছে শ্রদ্ধার শরীরের অংশ জঙ্গলে রয়েছে। তা পচে যেতে পারে বা কোনও প্রাণী খেয়ে ফেলতে পারে বলেও পুলিশের অনুমান।

যে অস্ত্র দিয়ে শ্রদ্ধার দেহের (Delhi-Mehrauli Murder) টুকরো টুকরো করেছিল আফতাব, এখনও তা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পাশাপাশি, খুনের সময় আফতাবের রক্তমাখা জামারও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। জেরা চলাকালীন আফতাব পুলিশকে জানায়, আবর্জনার ভ্যানে সে তার রক্তমাখা জামাকাপড় ফেলে দিয়েছিল। এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, কিছু প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এতটা সময়ের ব্যবধান যে তদন্তকে কঠিন করে তুলেছে, তা-ও মেনে নিয়েছেন তিনি। 

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles