মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অচলাবস্থার জেরে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ছেন পড়ুয়ারা। প্রায় আড়াই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও কন্ট্রোলার না থাকায় রেজাল্ট আটকে রয়েছে। তেমনই আটকে কর্মীদের বেতন। জেলার শিক্ষা মহলের (West Bengal education) দাবি, অব্যবস্থা ও অচলাবস্থার জেরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ সঙ্কটের মুখে। সেজন্যই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার হিড়িক শুরু হয়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। ইতিমধ্যেই ভর্তি হওয়া প্রায় ৪০ শতাংশ পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গিয়েছেন। দ্রুত অচলাবস্থা না কাটলে আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে তালা ঝুলবে বলে আশঙ্কা জেলার শিক্ষা মহলের।
কী জানালেন বিশ্ববিদ্যালয় (West Bengal education) কর্তা?
দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল রেজিস্ট্রার পঙ্কজ কুণ্ডু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকাঠামোগত ও অন্যান্য একাধিক সমস্যায় পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ছেন বলে মনে হয়। উপাচার্য না থাকায় ওই সমস্যা হচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় সমস্যা রাজ্যপালকে জানিয়েছি। এছাড়াও উচ্চ শিক্ষা দফতরে (West Bengal education) সব জানানো হয়েছে। তবে এখনও কোনও সুরাহা মেলেনি। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সঞ্চারি রায় মুখোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ভাড়া নেওয়া ক্যাম্পাসেই ২০২১-এর সেপ্টেম্বর মাসে পঠনপাঠন শুরু হয়। কিন্তু চলতি বছরের ১৪ মার্চ উপাচার্যের পদ থেকে সঞ্চারি রায় মুখোপাধ্যায়কে সরানো হয়। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও স্থায়ীভাবে উপাচার্য পদে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আপাতত ১৬ জন কর্মী রয়েছেন।
কী বলছেন ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকরা (West Bengal education)?
বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্ক বিভাগের চতুর্থ সেমেস্টারের ছাত্রী অর্পিতা কর্মকার বলেন, নবদ্বীপ থেকে এসে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস হল না। হস্টেলের সুবিধাও নেই। বাধ্য হয়ে ভাড়ায় থাকতে হচ্ছে। এদিকে, উপাচার্য ও কন্ট্রোলার না থাকায় তৃতীয় সেমেস্টারের ফল প্রকাশ হচ্ছে না। ফলে চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষাও পিছিয়ে যাবে। অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি। বালুরঘাট শহরের শিক্ষক কৃষ্ণপদ মণ্ডল বলেন,দীর্ঘ আন্দোলনের জেরে জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় (West Bengal education) হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই বিশ্ববিদ্যালয় আজ সঙ্কটে। পড়ুয়ারা চলে যাচ্ছেন। এই হাল দেখে আগামীতে কেউ ভর্তি হবে না। অবিলম্বে এই সমস্যাগুলির সমাধান হোক। ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদ বলেন, রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর উদাসীনতার জেরেই আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ছেন। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছি। আজও সদুত্তর পাইনি।
কী বলছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ?
জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমরনাথ ঘোষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় (West Bengal education) ছেড়ে যাওয়ার কোনও খবর আমাদের কাছে নেই। তবে রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করছেন না বলেই এই সমস্যাগুলি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে প্রথম সেমেস্টারে ইংরেজি, অঙ্ক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান, এই তিনটি বিষয়ে ১৫০টি সিটের মধ্যে ১৪২ জন ভর্তি হয়। চতুর্থ সেমেস্টার আসতেই পড়ুয়ার সংখ্যা একের পর এক কমে বর্তমানে তা ৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সেশনে আবার তিনটি বিষয়ের ১৫০টি সিটের মধ্যে ভর্তি হয়েছিল ১২৬ জন। এক বছর পর পড়ুয়ার সেই সংখ্যা মাত্র ৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। দুই সেমেস্টার মিলিয়ে মোট পড়ুয়া থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ চলে গিয়েছে। বর্তমানে ৬০ শতাংশ পড়ুয়া থাকলেও, পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের আগে তা আরও কমে যাবে বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours