তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
গরমের দাপট আর কমছে না। তাপমাত্রার পারদ চড়ছেই। তার সঙ্গে অস্বস্তিকর আবহাওয়া। তবে গরম মানেই বাঙালির আম, জাম আর কাঁঠাল খাওয়ার সময়। এই সময়ে বাঙালির পছন্দের এই তিন ফল (Summer Fruits) বাজারে দেদার পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই তিন ফল শরীরে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই খাওয়ার আগে জেনে নেওয়া দরকার, কতখানি খাওয়া যেতে পারে।
জাম খেলে কী উপকার পাওয়া যায়? (Summer Fruits)
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, জাম খুবই উপকারী একটা ফল। বিশেষ করে গরমে জাম খাওয়া আরও ভালো। তাঁরা জানাচ্ছেন, জামে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় নানান রোগের প্রকোপ বাড়ে। তাই নিয়মিত জাম খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। জামে রয়েছে একাধিক ভালো ব্যাকটেরিয়া। এই সব ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের জন্য বিশেষ উপকারী। গরমে অনেকেই হজমের সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু জাম খেলে অন্ত্র ভালো থাকে। গরমে অধিকাংশের ত্বকের একাধিক সমস্যা হয়। অনেকেই লাল দাগ, চুলকানি, সান বার্নের মতো নানান ত্বকের সমস্যায় জেরবার হন। জাম ত্বকের জন্য খুব উপকারী। জামে রয়েছে ভিটামিন। এছাড়াও রয়েছে নানান খনিজ পদার্থ। যেগুলো ত্বকের জন্য ভালো। গরমে ত্বকের সমস্যা কমায় জাম।
তবে চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জাম (Summer Fruits) রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তাই জাম খুব উপকারী। এতে রক্তের শর্করা প্রাকৃতিকভাবেই নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু যাদের শর্করা হঠাৎ করেই কমে যায়, তাদের অতিরিক্ত জাম খাওয়া উচিত নয়। পরিমিত জাম খেলে কোনও বিপদ হবে না। বরং শরীর সুস্থ থাকবে।
আমে কি বাড়বে ডায়াবেটিস?
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, আম খাওয়া নিয়ে নানান ভ্রান্ত ধারণা আছে। কিন্তু গরমে আম খাওয়া ভালো। তাঁরা জানাচ্ছেন, আম হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এই আবহাওয়ায় শরীরের উত্তাপ বাড়ছে। আবার অতিরিক্ত ঘামে শরীরে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই আমের মতো রসালো ফল (Summer Fruits) খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। এছাড়াও আম কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষ সাহায্য করে। পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, আমে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড। এগুলো শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। চোখের জন্য আম বিশেষ উপকারী। আমে রয়েছে একাধিক ভিটামিন। এই ভিটামিন চোখের সমস্যা, শুষ্ক চোখের মতো রোগ মোকাবিলায় বিশেষ সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, আমে ২৫ ধরনের ক্যারোটিন রয়েছে। এগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগী মানেই আম খাওয়া যাবে না, এমনটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, দিনে একটা বা দুটো আম খেলে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু প্রত্যেক দিন একাধিক আম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। তাছাড়া অতিরিক্ত আম খেলে স্থূলতার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কাঁঠাল খেলে কি পেটের সমস্যা হবে? (Summer Fruits)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরমে কাঁঠাল খাওয়া যেতেই পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, কাঁঠালে রয়েছে পটাশিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই তিন উপাদান হৃদপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী। এই তিন উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কাঁঠালে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ। এই দুই উপাদান চোখের জন্য খুবই উপকারী। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কাঁঠাল খেলে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা কমবে। কাঁঠালে রয়েছে ফাইটো নিউট্রিয়েন্স। পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই উপাদান থাকার জন্য কাঁঠাল খেলে আলসার, কোলন ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি কমে।
তবে, কাঁঠাল হজমের গোলমালের ঝুঁকি বাড়ায়। কাঁঠাল সহজপাচ্য নয়। তাই অনেক সময় অতিরিক্ত কাঁঠাল খেলে হজমের সমস্যা হয়। অনেকের আবার পেটের গোলমাল হয়। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ অতিরিক্ত থাকে। তাই কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের কাঁঠাল (Summer Fruits) এড়িয়ে চলাই ভালো।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours