মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত চাকরি হারালেন মোট ২৫২ জন। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta HC) একাধিক মামলা চলছে। গত ২৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) এজলাসে। এর আগে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২৬৮ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাও হয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই। ২৩ ডিসেম্বরের শুনানিতে বরখাস্ত হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের হলফনামা খতিয়ে দেখে প্রথম দফায় তাঁদেরই ৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এঁদের মধ্যে একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এরপর বৃহস্পতিবার, ১৪৬ জন শিক্ষকের আবেদনের শুনানি হয়। তাঁদের নথি খতিয়ে দেখেই ১৪০ জনের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতি। জানা গিয়েছে, ট্রিকস করে হাই কোর্টকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এমন মন্তব্য করে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ৬১ জনের আবেদনের শুনানি ছিল। তাঁদের বক্তব্য শোনার পর ৫৯ জনকে স্কুলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রথমে বরখাস্ত, পরে ফের বহাল
বরখাস্ত হওয়া ওই ২৬৮ জন চাকরিপ্রার্থীর মধ্যেই একজন হলেন টালিগঞ্জের বাসিন্দা জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার আবার নতুন করে তাঁর চাকরি ফিরিয়ে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৭ সালে তাঁর করা রিট পিটিশনের ভিত্তিতেই জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়কে নতুন করে চাকরিতে বহাল করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। তবে টালিগঞ্জের বাসিন্দাওই শিক্ষিকা একেবারে নতুনভাবে নিযুক্ত হবেন। বিগত ৫ বছর ধরে তিনি যে প্রাথমিক শিক্ষিকা পদে চাকরি করেছেন, সেই সময়সীমা তাঁর নতুন সার্ভিস বুক-এ যুক্ত হবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ১৪৩ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করল হাইকোর্ট, বেতন বন্ধের নির্দেশ
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চাকরি পেয়েছিলেন জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চাকরি পাওয়ার আগে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেছিলেন। তাঁর আবেদন ছিল, ২০১৪-এর টেটের প্রশ্নপত্রে ৬ এবং ২২ নম্বরের প্রশ্ন ভুল ছিল। তাই নিয়ম অনুযায়ী, ওই দুই প্রশ্নের নম্বর তাঁর পাওয়ার কথা। শিক্ষিকার দাবি, ওই মামলা হওয়ার পরেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তাঁকে নিজেদের অফিসে ডেকে নিয়োগপত্র দেয়। এপ্রসঙ্গে বিচারপতি স্পষ্ট জানান, এই পদ্ধতিতে চাকরি দেওয়া বেআইনি। সেই কারণে জয়তীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু অন্যদিকে, জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু ২০১৭ সালে রিট পিটিশন করেছিলেন, সেজন্য ওই ভুল প্রশ্নের নম্বর তাঁর পাওয়া উচিত বলে জানান বিচারপতি। সেই নম্বর পেলে টেট পাশ করবেন তিনি। এর ভিত্তিতেই এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জয়তী দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours