মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে তুমুল অশান্তি ছড়ায় ভাঙড়ে (Bhangar)। কার্যত দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে গোটা এলাকা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে সমস্ত হিংসাকে ছাপিয়ে গেল ভাঙড়। দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমা-গুলির লড়াইয়ে তিনজন রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যু হয়। এরপরই ভাঙড় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পূর্ব নির্ধারিত সব কর্মসূচি বাতিল করে শুক্রবার ভাঙড়ে যান তিনি। এরই মধ্যে এদিন ভাঙড় থানার পিছনে এক পুরনো বাড়ির কাছ থেকে সাতটি ব্যাগের মধ্যে প্রচুর বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। কে বা কারা সেই বোমা মজুত করে রেখেছিল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
ভাঙড়ের (Bhangar) হিংসা নিয়ে কী বলেছিলেন রাজ্যপাল?
মনোনয়ন জমার শেষ বেলার হিংসা নিয়ে গতকালই কড়া বিবৃতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাঁর বার্তা ছিল, 'নির্বাচনে জয় মৃতদেহ গণনার উপর নয়। ভোট গণনার উপর নির্ভর করা উচিত। আমাদের সংবিধান আক্রমণের মুখে। শয়তানের এই খেলা শেষ হওয়া উচিত। শেষের শুরুটা হবে পশ্চিমবঙ্গে। গণতন্ত্রে জনগণই প্ৰভু। নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ অবিচ্ছেদ্য অধিকার। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে হিংসার কোনও অবস্থান নেই। যে কোনও মূল্যে হিংসা নির্মূল করা হবে।' এদিন রাজ্যপাল আসছেন বলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। সাধারণ মানুষ গিয়ে রাজ্যপালের কাছে নালিশও জানিয়েছেন।
ভাঙড়ে (Bhangar) রাজ্যপালকে পেয়ে কী বললেন আইএসএফ কর্মীরা?
বৃহস্পতিবারই ভাঙড়ের (Bhangar) কাঁঠালিয়ার বিজয়গঞ্জ বাজারে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মুড়ি-মুড়কির মতো বোমাবাজি হয়। চলে গুলি। খুন হন রাজনৈতিক কর্মী। শুক্রবার ভাঙড়ে ঢুকে বিজয়গঞ্জ বাজারে গাড়ি থেকে নামেন রাজ্যপাল। ঘুরে দেখেন এলাকা। কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে। রাজ্যপালকে দেখেই এগিয়ে যান স্থানীয়রা। রাজ্যপাল আসবেন বলে এদিন বহু আইএসএফ কর্মী-সমর্থক সেখানে জমায়েত হন। এরই মধ্যে কয়েকজন আইএসএফ প্রার্থী রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন।রাজ্যপালের কাছে নালিশ জানিয়ে তাঁরা বলেন, ভয় দেখিয়ে, পথ আটকে তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। ক্যানিং থেকে গাড়ি করে দুষ্কৃতীরা ভাঙড়ে ঢুকেছিল। ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকাত মোল্লার নেতৃত্বে দুষ্কৃতীদের ওই বাহিনী ভাঙড়ে ঢুকে দাপিয়ে বেড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
কী বললেন রাজ্যপাল?
আইএসএফ কর্মীদের কাছে নালিশ পেয়ে রাজ্যপাল নিজের অফিসারদের কাছে জানতে চান, ‘কে এই শওকত মোল্লা?” তাঁরা সিভি আনন্দ বোসকে জানান, শওকাত মোল্লা ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক। এরপরই রাজ্যপাল ভাঙড় ২ নং বিডিও অফিসে ঢুকে যান। সেখানে কর্তব্যরত আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবারই এই ভাঙড় (Bhangar) ২ বিডিও অফিস কার্যত দুষ্কৃতীদের দখলে চলে গিয়েছিল। বিডিও অফিসের গেট আটকে রেখে ভিতরে চলে মনোনয়ন জমার পর্ব। মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বিরোধীরা। সেই হিংসা কবলিত এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি এদিন ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours