মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অমর কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিখ্যাত গল্প "রঙ্কিণী দেবীর খড়্গ" আজও বহু মানুষের স্মৃতিতে অম্লান। পশ্চিমবঙ্গের একদম প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের এক অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং জাগ্রত মন্দির এই রঙ্কিণী দেবীর মন্দির (Rankini Mandir)। কলকাতার একদম কাছেই, বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ঘাটশিলা। আর এই ঘাটশিলা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দির। ঝাড়খণ্ড তো বটেই, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার থেকেও বহু মানুষ আসেন এই মন্দিরে মা রঙ্কিণী দেবীকে পুজো দিয়ে নিজের মনস্কামনা পূর্ণ করার অভিপ্রায়ে।
মা কালীর এক রূপ? (Rankini Mandir)
ঘাটশিলা থেকে জাদুগোড়া যাওয়ার পথে জাদুগোড়ার কাছেই পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই মন্দিরের আরাধ্য রঙ্কিণী দেবীকে মনে করা হয় মা কালীর এক রূপ। আবার অনেকেই বলেন, মা রঙ্কিণী হলেন আদিবাসী মানুষের দেবী। কথিত আছে, দৈবাদেশে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। এক সময় রঙ্কিণী দেবীর মন্দিরে নরবলি হত বলেও জানা যায়। ইংরেজ শাসকদের হস্তক্ষেপে সেই জঘন্য প্রথা বন্ধ হয় এবং ঘাটশিলায় অবস্থিত প্রাচীন মন্দির স্থানান্তরিত করে এই জাদুগোড়ায়, আরন্যক পরিবেশে, পাহাড়ের কোলে। বর্তমান মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে দক্ষিণ ভারতীয় শিল্পশৈলীতে। রয়েছে গোপুরম। এই গোপুরমে দেবী রঙ্কিণীর (Rankini Mandir) বিভিন্ন রূপ চিত্রিত করা আছে। মন্দিরের প্রবেশদ্বারের উপরেই রয়েছে দেবী দুর্গার মহিষাসুর বধের পাথরে খোদাই করা মূর্তি। এখানে একটি পাথরকে দেবী রূপে পুজো করা হয়।
আর কী কী মন্দির আছে?
মূল মন্দিরের বাঁ দিকে রয়েছে গণেশ, আর ডান দিকে রয়েছে শিব মন্দির। এছাড়াও এখানে রয়েছে নানা দেব-দেবীর মূর্তি। মন্দিরের কাছেই গাছের ডালে লাল কাপড়ে আচ্ছাদিত করে নারকেল বেঁধে রেখে ভক্তরা মায়ের কাছে মানত করেন। মন্দিরের (Rankini Mandir) আশপাশের পাহাড়ি পরিবেশও অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক।
যাওয়া ও থাকা-খাওয়া (Rankini Mandir)
যাতায়াত-রঙ্কিণী মন্দিরে যাওয়ার জন্য আসতে হবে ঘাটশিলা। হাওড়া স্টেশন থেকে যাচ্ছে ইস্পাত এক্সপ্রেস, স্টিল এক্সপ্রেস, হাওড়া-ঘাটশিলা এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেন। দূরত্ব প্রায় ২১৫ কিমি। থাকা - খাওয়া-যাঁরা অমলিন প্রকৃতির মাঝে দুটো দিন থাকতে চান, তাঁরা থাকতে পারেন নিকটবর্তী রাত মোহনা নামের একটি অত্যন্ত সুন্দর স্থানে। এখানে রয়েছে "রিসর্ট রাত মোহনা ইন" (ফোন-০৮৪০৯২১১৫৫৫, ০৯৯৩৪৫৮০৮৬০)। অন্যথায় ঘাটশিলা থেকে ঘুরে নিতে পারেন। ঘাটশিলায় আছে জে এন প্যালেস (০৯২৩৪৬৪৩৫৪০), সুহাসিতা রিসর্ট (০৯৭৭১৮৩১৮৭৭) প্রভৃতি। সবকটিতেই রয়েছে খাওয়ার ব্যবস্থা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours