মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভোট দিলে দিতে হবে জরিমানা। একেবারে গুনতে হবে দশ হাজার টাকা। জরিমানার এমনই নিদান দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এনিয়ে গ্রামে রীতিমতো সালিশি সভাও বসানো হয়। সেখানেই নেওয়া হয় এই সিদ্ধান্ত। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার গাজল ব্লকের দেওতলা গ্রাম পঞ্চায়েতে। ভোট (Panchayat Vote) দিলে দিতে হবে জরিমানা, এই দাবিতে পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে। অনুন্নয়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গ্রামের এই সিদ্ধান্তে এককাট্টা সব মানুষ। এই অঞ্চলের বড় জগদীশপুর, দোআঁশ এলাকায় নেই কোনও পাকা রাস্তা। সামান্য বৃষ্টিতেই চলাফেরার অযোগ্য হয়ে ওঠে এই রাস্তা। দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও পুকুরের জলই একমাত্র ভরসা। গ্রামবাসীদের দাবি, বহুবার আবেদন করা হয়েছে পঞ্চায়েত থেকে গাজল ব্লকে। আন্দোলনও হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। ভোট আসলেই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। ভোট মিটতেই কথা রাখেন না কেউ। তাই এবার গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে ভোট (Panchayat Vote) বয়কটের ডাক দিয়েছেন।
কী বলছেন গ্রামের বাসিন্দারা?
এলাকার বাসিন্দা সন্তোষী মণ্ডল বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি দীর্ঘদিনের। গ্রামে কোনও উন্নয়ন নেই। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’’ গ্রামের আরও এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘৪৫ বছর ধরে বসবাস করছি এই গ্রামে। খুবই কষ্টের মধ্যে থাকতে হয়। চারদিকে বড় বড় ঝাঁ চকচকে রাস্তা হয়েছে। কিন্তু আমাদের গ্রামের হাল আজও ফেরেনি। বর্ষাকালে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে জীবন যাপন। কাদায় হাঁটা যায় না। আজ তাই পথে নেমেই ভোট (Panchayat Vote) বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
পুকুরের জলও ফুটিয়ে খেতে হয়
এক প্রবীণ মহিলা বলেন, ‘‘একটা সাবমার্সিবল আছে বটে। তবে তা গ্রামের সমস্ত মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। লোডশেডিং এখানে খুব ঘন ঘন হয়। মাঝে মধ্যে ৬-৭ ঘণ্টা লোডশেডিং হলে সাবমার্সিবলের জল মেলে না। তখন বাধ্য হয়ে পুকুরের জল ফুটিয়ে খেতে হয়। আমরা তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভোট (Panchayat Vote) বয়কটের। যে বা যারা এই নির্দেশ অমান্য করবে, তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হবে।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours