মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) নিয়োগ-দুর্নীতির পর এবার পঞ্চায়েতের টিকিট-দুর্নীতিতে ফের বিদ্ধ শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। জলপাইগুড়ির মেটেলু ব্লকে টাকার বিনিময়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট বিক্রির অভিযোগ তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্যা সীমা সরকার। অপর দিকে ডামডিম গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী বোর্ডের সভাপতি রীনা বরা দলের থেকে সুবিচার পাননি। এই অভিযোগে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা করেন তিনি। জেলা জুড়ে তীব্র উত্তেজনা।
মেটেলু ব্লকে (Jalpaiguri) কী অভিযোগ ছিল?
এবারের নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাতাবাড়ি দিঘির পাড়ে নিজের বাসভবনে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন সীমা সরকার। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হিসাবে অনেক কাজ করেছি। মৎস্যজীবীদের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি। এত ভালো কাজ করার পরেও দল এবার আমাকে টিকিট দিল না। যেহেতু আমি টাকা দিতে পারিনি, তাই আমাকে টিকিট দেওয়া হয়নি। সীমাদেবী সাফ জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের কোনও কাজ করবেন না। প্রচারেরও কোনও কাজ করবেন না। তবে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার দায়িত্বে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যোগ্য ব্যক্তিদের টিকিট দেওয়া হয়েছে, টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি করা হয়নি।
ডামডিম গ্রাম পঞ্চায়েতে কী হয়েছে?
ডামডিম (Jalpaiguri) গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির ৯ নম্বর আসনে প্রার্থী হিসাবে নাম ছিল বিদায়ী বোর্ডের সভাপতি রীনা বরার। কিন্তু তিনি নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়ে নির্দল হিসাবেই লড়াই করবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন। দলের থেকে সুবিচার না পেয়েই তিনি এই সিন্ধান্ত নিয়েছেন। অপর দিকে দলের তালিকায় নাম না থাকলেও মাল ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুশীলকুমার প্রসাদ, ১১ নম্বর আসনে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছেন। রীনা বরা বলেন, দল তাঁর সাথে দ্বিচারিতা করেছে এবং তাঁকে অন্ধকারে রেখে, তাঁর প্রতি অন্যায় করেছে। আর সেই কারণেই নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। পাশাপাশি জেতার ব্যাপারে তিনি ১০০% নিশ্চিত।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রকাশ
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে রীনা বরা ও সুশীল প্রসাদের দ্বৈরথে সরগরম হয়ে উঠেছিল মাল ব্লকের রাজনীতি। সুশীলবাবুর বিরুদ্ধে তাঁকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ করেছিলেন রীনা বরা। এদিকে সুশীল প্রসাদ বলেন, দল আমাকে দাঁড়াতে বলেছে, তাই আমি দাঁড়িয়েছি। শুধু আমি নয়, গোটা মাল (Jalpaiguri) ব্লকের ১৭৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১৯ টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ৩ জেলা পরিষদের আসনে আমাদের প্রার্থীরা জিতবেন। রীনা বরা যেহেতু দলের উপর আস্থা না রেখে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, সেজন্য দল তো ওই আসন ফাঁকা রাখতে পারে না। তাই ওই আসনে দল অন্য জনকে দাঁড় করিয়েছে।
শুধু রীনা বরাই নয়, তৃণমূল দলের টিকিট না পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতির আরেক সদস্যা মঞ্জুলা লামা দলের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়েছেন। মাল ব্লকের অধিকাংশ এলাকাই আদিবাসী অধ্যুষিত। এই অবস্থায় আদিবাসী ভোট এখন কোন দিকে যায়, সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক মহল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours