মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী, দুই সন্তান সহ চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। রবিবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে খড়দার (Khardah) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের করবি টাওয়ার্স ফ্লাটে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি স্বামী। এরপরই স্ত্রী, দুই সন্তানকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে নিজেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ব্যবসায়ী। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যবসায়ীর নাম বৃন্দাবন কর্মকার। তাঁর স্ত্রী দেবশ্রী কর্মকার, মেয়ে দেবলীনা কর্মকার এবং আট বছরের ছেলের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে? (Khardah)
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃন্দাবনবাবুর বাড়ি খড়দার (Khardah) আদর্শপল্লি এলাকায়। তিনি বলরাম হসপিটালের কাছে এম এস মুখার্জি রোডে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। ব্যারাকপুর শান্তিবাজারে তাঁর একটি কাপড়ের দোকান ছিল। জানা গিয়েছে, আদর্শপল্লির জায়গাটিকে তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। আবার জানা গিয়েছে, আদর্শপল্লির জমিতে প্রোমোটিং হচ্ছে বলে তিনি ভাড়া বাড়়িতে পরিবার নিয়ে থাকছিলেন। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। জানা গিয়েছে, কালীপুজোয় তিনি এবার প্রতিমা ও বেনারসী দিয়েছিলেন। ফল দিয়ে তৈরি মালাও দিয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই আবাসনে দুই সন্তান, স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন এক ব্যবসায়ী। সকালে ঘরের দরজায় বার বার বেল বাজিয়ে ডাকলেও কোনো সাড়া মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা খড়দা পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলারকে খবর দেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। দরজা ভেঙে পুলিশ ঘরে ঢুকে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় দুই সন্তান সহ স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আর ব্যবসায়ীর ঘরের ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
সুইসাইড নোটে কী লেখা রয়েছে?
ঘরের ভিতর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। তাতে লেখা রয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে এক যুবকের বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল। বার বার বলার পরও সে কর্ণপাত করেনি। তাই, এই চরম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার একটি দোকান থেকে রুটি কিনতে শেষবার ব্যবসায়ীকে দেখা গিয়েছিল। তারপর আর কোনও খোঁজ মিলছিল না। এদিন ঘর থেকে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
পুরসভার চেয়ারম্যানের কী বক্তব্য?
খড়দা (Khardah) পুরসভার চেয়ারম্যান নীলু সরকার বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। এই ঘটনার পিছনে যে কারণ রয়েছে পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে। আমরা ওই ব্যবসায়ীর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগযোগ করার চেষ্টা করছি।
বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিকের কী বক্তব্য?
বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) আশিস মৌর্য ঘটনাস্থলে যান। তিনি সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেন। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরে, তিনি বলেন, সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। একান্তই পারিবারিক, না অন্য কিছু রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours