মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: টানা বৃষ্টিতে জেরবার রাজ্যবাসী। একাধিক জায়গায় জমা জলে (Flood in Bengal) ভোগান্তি বাড়ছে। হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর সহ রাজ্যের বহু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আর তার মধ্যেই রেবিস ভ্যাকসিন, অ্যান্টি ভেনম টিকার আকাল পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই পরিস্থিতি স্বাস্থ্য পরিষেবায় যথেষ্ট সমস্যা তৈরি করতে পারে বলেও আশঙ্কা চিকিৎসকদের একাংশের।
কোন ভ্যাকসিনের চাহিদা বাড়ছে? কেন বাড়ছে? (Flood in Bengal)
রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ফলে অধিকাংশ জায়গায় জল জমছে। এই পরিস্থিতিতে সাপের উপদ্রব বাড়ে। আবার ইঁদুর, ছুঁচোর উপদ্রবও বাড়ে। বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় সাপে কামড়ানো, ইঁদুর কিংবা ছুঁচোয় কামড়ানোর মতো ঘটনা বাড়তে থাকে। আবার এর সঙ্গে কুকুর কামড়ানোর মতো ঘটনাও ঘটে। যেহেতু খাবার এবং জলের চাহিদা বাড়ে, মানুষের মতো অন্যান্য প্রাণীরাও অস্থির হয়ে থাকে। তাদের বাসস্থানের সমস্যা হয়। আর জমা জলের জেরে অনেক সময়েই ঘরের ভিতরেও সাপ ঢুকে আসে। শিশু থেকে প্রবীণ, সকলের বিপদ বাড়ে। তাই এই সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রেবিস এবং অ্যান্টি ভেনম টিকার প্রয়োজনীয়তা বেশি। এই সময়ে জেলাস্তরের হাসপাতালে এই ধরনের টিকার চাহিদা বাড়ে। বিশেষত পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, মালদা সহ একাধিক জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চলতি সপ্তাহে এই টিকার চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই টিকাগুলির জোগান বাড়েনি। তাই অনেক সময়েই ভোগান্তি বাড়ছে। চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, টিকার জোগান না বাড়ালে পরিস্থিতি বিপজ্জনক (Vaccination problem) হয়ে উঠতে পারে।
কেন আশঙ্কিত চিকিৎসক মহল?
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা, মুর্শিদাবাদ কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলার একাধিক প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাপে কামড়ানো এবং ইদুরে কামড়ানোর মতো ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। কিন্তু বন্যাবিধ্বস্ত (Flood in Bengal) পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়ার একাধিক জায়গায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রেবিস কিংবা অ্যান্টি ভেনম টিকা নেই। ফলে রোগীকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল ছুটতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে রোগীর ভোগান্তি আরও বাড়ছে। এমনকী প্রাণহানির আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, মহকুমা কিংবা জেলা হাসপাতালেও পর্যাপ্ত টিকা নেই। তাই একাধিক হাসপাতালে রোগীকে ঘুরতে হচ্ছে। পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে বলেই আশঙ্কা করছে চিকিৎসক মহল! তাঁরা জানাচ্ছেন, কুকুর, ইঁদুর কামড়ানোর পরে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে রেবিস ভ্যাকসিন না দিলে প্রাণ সংশয় তৈরি হয়। পাশপাশি সাপে কামড়ানো ব্যক্তির মৃত্যু রুখতে পারে একমাত্র অ্যান্টি ভেনম টিকা। তাই যত দ্রুত এই টিকা দেওয়া হবে, রোগীর প্রাণ সংশয় তৈরি হবে না। তাই এই টিকা প্রত্যেক হাসপাতালে এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত থাকা জরুরি। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল ছুটতে ছুটতে সময় পেরিয়ে গেলে মর্মান্তিক পরিণতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে চিকিৎসকদের একাংশ।
কী বলছেন স্বাস্থ্যকর্তারা? (Flood in Bengal)
প্রত্যেক বছরে হুগলি, হাওড়া কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই ধরনের সমস্যা সম্পর্কে স্বাস্থ্য প্রশাসনের ওয়াকিবহাল থাকা উচিত বলেই মনে করছে চিকিৎসকদের একাংশ। কিন্তু তার পরেও কেন এই সব টিকার আকাল (Vaccination problem)? এই প্রশ্নের অবশ্য কোনও উত্তর দিতে চাননি স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, "সব সময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রত্যেক জেলার হাসপাতালে যাতে ঠিকমতো জীবনদায়ী ওষুধ ও ভ্যাকসিন পৌঁছতে পারে, সে দিকে নজর রয়েছে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours