মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ কয়েকদিন ধরে ময়লা ও আবর্জনা ফেলার ফলে পুকুরের বেশিরভাগটাই বুজে গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের (Barasat) একটি পুকুর এইভাবে দিনের পর দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অথচ পুকুর পুনরুদ্ধারের কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি পৌরসভা কিংবা প্রশাসনের তরফ থেকে, এমনটাই অভিযোগ। জমির মালিক ও পৌরসভা একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে রেহাই পেতে চাইছে।
কীভাবে পুকুর ভরাট?
বারাসত পৌরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের হৃদয়পুর স্টেশন রোড দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ রোজ যাতায়াত করেন। সেই রাস্তার পাশেই ৮৪ শতক জমি জুড়ে বিশাল একটি (Barasat) পুকুর ছিল কয়েক বছর ধরে। সেই পুকুরেই এলাকার লোকজন একসময় স্নান করতেন। বৃষ্টি হলেই এলাকার জমা জল গিয়ে পড়ত পুকুরে। সেই ৮৪ শতক অংশের মধ্যে ২৮ শতক কয়েক বছর আগে কিনেছিলেন এলাকার ব্যবসায়ী সঞ্জীব দত্ত। সেই পুকুরটির ২৮ শতক জমি (প্রায় ১৮ কাঠা) দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিল অবহেলিত অবস্থায়। সেখানেই নোংরা ও আবর্জনা ফেলতে ফেলতে পুকুরের অনেক অংশ ভরাট হয়ে যায়, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। বর্তমানে পুকুরটিকে দেখলে আর বোঝার উপায় নেই, সেটি এককালে পুকুর ছিল। বুজিয়ে ফেলা পুকুরের জমির অংশে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। জমি দখলের চেষ্টাও চলছে। আর এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় এক বাসিন্দা ভাস্কর চক্রবর্তী জানান, এককালে গোটাটাই পুকুর ছিল এখানে। সেই পুকুরে (Barasat) আমরাও একসময় স্নান করতাম। সাঁতার কাটতাম৷ সেই পুকুর ভরাট হতে দেখে এখন খারাপ লাগছে। এটা অবিলম্বে প্রশাসনের দেখা উচিত। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিশেষ ভয়ের কারণে সেভাবে এতদিন মুখ খুলতে পারিনি আমরা। বর্তমানে অনাচার দেখে এখন মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছি। পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসন আর পৌরসভা কী ভূমিকা পালন করে, তাই এখন দেখার।
জমির মালিকের বক্তব্য
যার বিরুদ্ধে পুকুর (Barasat) বুজিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সেই জমির মালিক সঞ্জীব দত্ত বলেন, এটা পুকুর নয়। গোটাটাই বাস্তু জমি। তার রেকর্ড এবং তথ্য সবকিছুই রয়েছে আমাদের কাছে। প্রশাসন দেখতে চাইলে তা দেখিয়ে দেব। পুকুর ভরাট করার চেষ্টা কখনও করিনি আমি।
পৌরসভার বক্তব্য
জমির মালিকের অভিযোগ উড়িয়ে পৌরসভার (Barasat) পৌরপারিষদ সৌমেন আচার্য বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। পৌরসভা কখনও অন্যের জায়গায় গিয়ে নোংরা, আবর্জনা ফেলে না। পৌরসভার নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড রয়েছে। এই বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন স্থানীয় কাউন্সিলর।
কাউন্সিলরের বক্তব্য
অপরদিকে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাম কাউন্সিলর শুক্লা ঘোষকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনিও জমির মালিকের উপর দোষ চাপিয়েছেন। তাঁর কথায়, পৌরসভা কেন ওখানে নোংরা, আবর্জনা ফেলতে যাবে! বিষয়টি নজরে আসার পরই চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তবে, এখনও সদুত্তর মেলেনি। পুকুর (Barasat) ভরাট রুখতে বদ্ধপরিকর আমরা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours