মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশিচমবঙ্গে ফুটবল অ্যাকাডেমি তৈরি করবে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। মাদ্রিদে বসে সদর্পে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপধ্যায় (Mamata Banerjee)। স্বাক্ষরিত হল মউ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই অ্যাকাডেমি তৈরি করে কি আদৌ কোনও লাভ হবে বাংলার ফুটবলের? নাকি পুরোটাই গিমিক।
কীসের তাগিদ লা-লিগার
বাংলার ফুটবল (Bengal Football) উন্নতিতে লা লিগার বিশেষ তাগিদ না থাকাই স্বাভাবিক। তারা আসলে মার্কেট ধরার চেষ্টা করছে। বাংলায় ফুটবলের বিপুল জনপ্রিয়তার কথা সকলরেই জানা। যা ধরা পড়েছে লা লিগার প্রসিডেন্ট জাভিয়ার তেভেজের ট্যুইটেও। আর এই সুযোগটাই তিনি কাজে লাগাতে চাইছেন স্পেনের ফুটবল বাজারকে সম্প্রসারিত করতে। একটা সময় ভীষণই জনপ্রিয় ছিল লা লিগা। বার্সেলোনার জার্সিতে মেসি কিংবা রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে রোনাল্ডোর খেলা দেখার জন্য রাত জাগত বাংলার আপামর ফুটবলপ্রেমী। কিন্তু এখন কেউ ফিরেও তাকায় না স্প্যানিস ফুটবলের দিকে। তার একটাই কারণ—মেসি, রোনাল্ডাদের অনুপস্থিতি। তাঁরা স্পেন ছাড়ার পর লা লিগার জনপ্রিয়তা দ্রুত কমেছে। আগ্রহ হারাচ্ছে স্পনসর ও সম্প্রচারকারী সংস্থা। তাই লা লিগায় জোয়ার আনতে ভারতীয় ফুটবলের বাজার ধরতে মরিয়া জাভিয়ার।
রাজ্যের ফুটবল তলানিতে
গত কয়েক বছর ধরেই ভারতীয় ফুটবলের বাজার ধরতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লা লিগা। মাঝে মধ্যেই ভারতে ছুটে আসেন লা লিগার প্রসিডেন্ট জাভিয়ার। দিল্লিতে খুলেছেন অফিসও। কিন্তু তেমন সাড়া না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাংলাকে বেছে নিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ, এমনটাই মত ফুটবল পণ্ডিতদের। বাংলার মাটিতে অ্যাকাডেমি তৈরির মউ স্বাক্ষর আসলে অশ্বডিম্ব প্রসবের প্রথম পদক্ষেপ। যে রাজ্যের ফুটবল তলানিতে, সেখানে লা লিগার মতো সংস্থার অ্যাকাডেমি তৈরি করে কোনও লাভ যে হবে না, তা ভালোই জানেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় ও লা লিগা কর্তৃপক্ষ।
প্রচারের আলোয় থাকার নেশা মমতার
আসলে প্রচারের আলোয় থাকাটা নেশা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এক্ষেত্র সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো স্পোর্টস আইকনকে সঙ্গী করেছেন মাদ্রিদ সফরে। সৌরভের ইমেজকে কাজে লাগানোর প্রয়াস অতীতেও করেছেন তিনি। সৌরভ নিজেও জানেন, এসব করে কিছু হবে না। তিনি বহুদিন ধরে এটিকে কলকাতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও পরে কলকাতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে।
আরও পড়ুন: মউ স্বাক্ষরই সার, মমতার এবারের বিদেশ সফরের নিটফল সেই ‘অশ্বডিম্ব’!
ময়দানে পিছিয়ে বাংলা
আসলে, শুধু শিল্প, শিক্ষায় নয়, খেলাধুলাতেও দেশের অন্য রাজ্যের সঙ্গে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ। তার বহু উদাহরণ রয়েছে। একসময় সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার (Bengal Football) দাপট ছিল নিরঙ্কুশ। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যের যে, ২০১৬-১৭ মরশুমের পর বাংলা আর সন্তাষ ট্রফি জিততে পারেনি। কয়েকদিন আগেই এশিয়া গেমসের জন্য ভারতীয় দল ঘোষণা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন বাংলার মাত্র একজন ফুটবলার। আসলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁরা জামানায় বাংলার খেলাধুলার বিপর্যয় স্পষ্ট দেখতে পারছেন। শুধু ফুটবল কেন, ক্রিকেটেও একই অবস্থা। বাংলার ছেলেরা সুযোগ পান না কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে। আর সেই দলের অন্যতম মালিক শাহরুখ খানকে জামাই আদর করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও করা হয়। আসলে মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়াটা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন। তাঁর এই স্পেন সফর কিংবা লা লিগার সঙ্গে বাংলায় অ্যাকাডেমি তৈরি নিয়ে মউ স্বাক্ষর আসলে নিজের ব্যর্থতা ঢাকার একটা অজুহাত মাত্র। যা দিয়ে ব্যর্থতা ঢাকা পড়বে না।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ
+ There are no comments
Add yours