মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কৃষকদের সুবিধার্থে বছর কয়েক আগে বালুরঘাট ব্লকের ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৈরি করা হয়েছিল কৃষক বাজার বা কিষাণ মান্ডি (Kisan Mandi)। বর্তমানে এটি বছরে দুই থেকে তিন মাস খোলা থাকে৷ বাকি সারা বছর প্রায় তালাবন্ধ অবস্থাতেই থাকে৷ যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই কিষাণ মান্ডি তৈরি করা হয়েছিল, তা কার্যত জলে গিয়েছে বলেই অভিযোগ। দিনের বেলা একজন সিভিক ও রাতে দুজন সিভিক শুধু পাহারাদার হিসাবে নিযুক্ত রয়েছে৷ লোকজন চলাচল না করার ফলে বর্তমানে কিষাণ মান্ডি সাপ, পোকামাকড়ে ভর্তি হয়ে গেছে৷ সংস্কারের অভাবে ভেঙে পড়ছে কিষাণ মান্ডির বিভিন্ন ভবন। বছরে দু-তিন মাস শুধু ধান কেনার জন্য কিষাণ মান্ডি খোলা হয়। তাই সারা বছর এটি খোলা রাখার আর্জি জানিয়েছেন কৃষকরা।
অবস্থান (Kisan Mandi) নিয়ে প্রথম থেকেই ক্ষোভ
বর্তমান সরকারের আমলে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আটটি ব্লকেই কৃষকদের স্বার্থে কিষাণ মান্ডি তৈরি করা হয়। প্রায় বছর সাত-আট আগে এগুলি তৈরি করা হয়েছে। অন্যান্য ব্লকের পাশাপাশি বালুরঘাটেও কিষাণ মান্ডি তৈরি করা হয়। ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজিরপুর মাহিনগর এলাকায় রয়েছে বালুরঘাট কিষাণ মান্ডি (Kisan Mandi)। এর অবস্থান নিয়ে প্রথম থেকেই ক্ষোভ ছিল কৃষক থেকে ব্যবসায়ীদের৷ কারণ, বালুরঘাট শহর থেকে একেই অনেকটা দূর৷ তার উপর জাতীয় সড়ক থেকে অনেকটা ভিতরে৷ যার ফলে সকালের বাজার কিষাণ মান্ডিতে চালু করার চেষ্টা হলেও তা বিফলে যায়। বর্তমানে শুধুমাত্র বছরে দু থেকে তিন মাস কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনে জেলা প্রশাসন। তারপর তা বন্ধই থাকে।
রাতে ডুবে থাকে অন্ধকারে (Kisan Mandi)
কিষাণ মান্ডি চালুর মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের হয়রানি রোখা। নিজেদের ফসল খুব সহজেই যাতে তাঁরা কিষাণ মান্ডিতে বিক্রি করতে পরেন, তার ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি সবজি মজুত করার জন্য ছোট হিমঘর থাকারও কথা ছিল। অন্যান্য কৃষিপণ্য রাখার সুব্যবস্থা রয়েছে কিষাণ মান্ডিতে (Kisan Mandi)। পাশাপাশি বাজারেরও সুব্যবস্থা রয়েছে এখানে। কিন্তু শহর থেকে দূরে হওয়ায় জেলার অন্যান্য স্থানের মতো এটিও সচল নেই। রাতের বেলা পুরো কিষাণ মান্ডি চত্বর প্রায় অন্ধকারে ডুবে থাকে। তবে যখন ধান কেনা হয়, তখন আলোর ব্যবস্থা সাময়িক ভাবে করা হয়। এবিষয়ে মালঞ্চার কৃষক সুকমল সরকার বলেন, কিষাণ মান্ডিটি শহর থেকে অনেকটা দূরে৷ এছাড়াও রাস্তার পাশে নয়। যার ফলে ধান বিক্রি করতে বা বাজার করার জন্য যাওয়াটা খুব মুশকিল। এখন শুধু আমন ধান কেনার সময় খোলা থাকে৷ অন্য সময় বন্ধই থাকে। তবে সব কিছু এক ছাতার তলায় হলে সকলের সুবিধা হবে।
কী অভিযোগ বিজেপির? কী বলছে তৃণমূল?
এবিষয়ে বিজেপির স্থানীয় মন্ডল সভাপতি সুভাষ সরকার বলেন, কৃষকদের সুবিধার জন্য কিষাণ মান্ডিটি (Kisan Mandi) তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তা সেভাবে চালুই হয়নি এবং ঠিক জায়গায় এটি করাও হয়নি। যার ফলে কৃষকরা সেখানে যেতে চায় না। বর্তমানে শুধু ধান কেনার সময় খোলা থাকছে৷ বাকি সময় বন্ধ থাকে৷ এর ফলে কিষাণ মান্ডি চত্বরে অসামাজিক কার্যকলাপ বাড়ছে। প্রশাসনের এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এবিষয়ে বালুরঘাট ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বপন বর্মন বলেন, বালুরঘাট কিষাণ মান্ডিটি শুধুমাত্র আমন ধান কেনার সময় নয়, সারা বছর যাতে চালু থাকে তার জন্য ব্লক ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। তবে বিজেপি যে অভিযোগ করছে কিষাণ মান্ডিতে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কারণ সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ার থাকে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours